‘তিমির রাত্রি থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন বঙ্গবন্ধু’

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেছেন, আমরা তিমির রাত্রিতে অবস্থান করছিলাম, সেখান থেকে আমাদের আলোর পথে নিয়ে এসেছেন বঙ্গবন্ধু। সেজন্য আমাদের আজকের আয়োজন— ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছো জ্যোতির্ময়, তোমারই হোক জয়।’ বঙ্গবন্ধু যেখানেই থাকো, তোমার জয় হোক।

আজ বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথম দিনের আয়োজনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙালি এক হতভাগ্য জাতি। শত শত বছর বিদেশি দ্বারা, বহিরাগতদের দ্বারা, বিদেশি ভাষার দ্বারা শাসিত, শোষিত, লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত ছিল। এরপর দেশভাগের (ভারত-পাকিস্তান) পর পাকিস্তানের সঙ্গে গিয়ে দেখলাম সেটা মহা ফাঁকিস্তান। সেই দীর্ঘ তীক্ত অভিজ্ঞতা সহজে ভুলবার নয়। বহিরাগতরা আমাদের বারবার লুণ্ঠন করেছে। এমনকি পর্তুগিজ জলদস্যু, মারাঠা দস্যুরাও লুণ্ঠন করেছে। গোলামির জিঞ্জির থেকে মুক্ত করতে এক মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটল। তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

জাতীয় অধ্যাপক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তি দিলেন। বিনিময়ে তাঁকে সপরিবারে জীবন দিতে হলো। কিন্তু তিনি অমর হয়ে গেলেন। মানুষ একবারই মরে। কিন্তু তাঁর কর্ম দ্বারা স্থির হয় তিনি অমর কি না। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমরা সেটা উপভোগ করেছি। একটা পরাধীন জাতিকে গোলামির অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছেন। এজন্য আমরা তাঁর কাছে চিরঋণী। আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য মোনাজাত করি।’

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল হতে চললো। এমতাবস্থায় তাঁর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। এই আয়োজনের জন্য মুখ্য সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ পুরো টিমের অক্লান্ত পরিশ্রম ভুলবার নয়। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

এর আগে আজ বিকেলে ধর্মীয় গ্রন্থ থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এরপর মুজিব শতবর্ষের থিম সংগীত উপস্থাপনা করা হয়। এটি লিখেছেন কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও সুর করেছেন নকিব খান। পরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকর্ষণীয় ফ্লাইফেস্টের রেকর্ড ভিডিও উপস্থাপন করা হয়। দেশের শিল্পীদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ও জাতির পিতা শেখ মুজিবকে নিয়ে গান আর মনোজ্ঞ উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা’র ধারণ করা ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। এরপর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গণে কাজ করা ব্রিটিশ সাংবাদিক স্যার মার্ক টালির বক্তব্য প্রচার করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত আছেন মালদ্বীপের ফার্স্টলেডি ফাজনা আহমেদ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের স্ত্রী রাশিদা খানম, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা প্রধান, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।