তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুহার কমেছে
তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুহার ২৭ শতাংশ কমে এসেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় পুষ্টি সেবা। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পূর্বে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যু হার ছিল ৩০ শতাংশ, কিন্তু দেশের ৪৩৬ হাসপাতালে স্যাম ইউনিটের কার্যক্রম শুরুর পর বর্তমানে মৃত্যু হার এসে দাঁড়িয়েছে ৩ শতাংশের নিচে।
আজ সোমবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত মারাত্মক তীব্র অপুষ্টি ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত সেবাকেন্দ্র সমূহের চতুর্থবার মূল্যায়ন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের প্রচারণামূলক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
অনুষ্ঠানে লিখিত প্রবন্ধে জাতীয় পুষ্টি সেবার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এটিএম রিয়াজ উদ্দিন জানান, মারাত্মক তীব্র অপুষ্টি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের অসুস্থতা ও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। প্রতিবছর বিশ্বে ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ২ কোটি শিশু মারাত্মক তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১০ লাখ (৪৫ শতাংশ) শিশু মারা যায়। এই শিশুদের অধিকাংশ দক্ষিণ এশিয়া ও সাব সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলে বাস করে। গত দুই দশকে, বাংলাদেশ অপুষ্টির হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
একটি সমীক্ষা তুলে ধরে তিনি বলেন, অপুষ্টিতে আক্রান্ত একটি শিশুর উপার্জনের সক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু খুব সহজেই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হতে পারে। একজন অপুষ্ট মা সঠিক যত্ন ও সেবার অভাবে একটি অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেয় এবং ঐ শিশুটি ধীরে ধীরে অপুষ্ট শিশু হয়ে বেড়ে ওঠে, শিশুটি যদি মেয়ে শিশু হয় তবে সেই মেয়ে শিশুটি পরবর্তীতে আবার আরেকটি অপুষ্ট শিশুর জন্ম দিবে। এভাবেই সে অপুষ্ট চক্রের মধ্যে ঘুরতে থাকবে। এই কারণে অপুষ্ট শিশু শনাক্তকরণ চিকিৎসা খুবই জরুরি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, নিউট্রিশন নিয়ে আমাদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর ছাড়া আর কোনো কাজ আছে বলে জানা ছিল না। এই অনুষ্ঠানে এসে নিউট্রিশনের গুরুত্ব কতটুকু আপনাদের মুখ থেকে শুনলাম এবং জানলাম। শিশুদের অপুষ্টি সংক্রান্ত একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন আপনারা দিয়েছেন, যাতে নিজেরা কী কী কাজ করছেন সে বর্ণনাও দিয়েছেন।
খুরশিদ আলম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে যে নিউট্রিশন কাউন্সিল করেছিলেন, এদেশের মানুষের পুষ্টি নিয়ে সে সময়েই তার দূরদর্শিতা ছিল। তিনি চেয়েছিলেন দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন মেধাবী ও পুষ্টিসমৃদ্ধ হয়, যারা দেশের জন্য সুস্থতার সাথে কাজ করতে পারবে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা মানুষের পুষ্টিসেবা নিশ্চিতে কাজ করছি। আমরা যেন এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারি, সে লক্ষ্যে সবাই মিলে কাজ করবো।