তীব্র গ্যাস সংকটে সাভার-আশুলিয়ার পোশাক কারখানা
সাভার ও আশুলিয়ায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। সময়মতো শিপমেন্ট করা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। এ ছাড়া বিদেশি ক্রেতা হারানো আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে।
পোশাক কারখানার মালিকদের অভিযোগ, সাভার ও আশুলিয়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে কারখানা রয়েছে এক হাজার ২০০’র বেশি। কারখানার জেনারেটর বা বয়লার চালানোর জন্য ১৫ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চিতে গ্যাসের চাপের ইউনিট) চাপের গ্যাস প্রয়োজন। কিন্তু, জানুয়ারি থেকে এ চাপ ২-৩ পিএসআইয়ে নেমে এসেছে। এ চাপের কারণে সমস্যা নিয়েই চলছে গ্যাসচালিত মেশিনের কারখানাগুলো। এ কারণে কারখানায় ব্যাপকভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
সাভারের আল মুসলিম গ্রুপের ডিরেক্টর মোসলেম উদ্দিন জানান, ১ জানুয়ারি থেকে তাঁদের কারখানায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। সকাল থেকে গ্যাসস্বল্পতায় বন্ধ থাকে বয়লার। ফলে শ্রমিকেরা কাজে এলেও তাঁরা বসে থাকনে।
গত কয়েক মাস ধরে চলছে গ্যাসের এ সংকট। ফলে উৎপাদন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা বলছেন, জরুরি রপ্তানি কাজের জন্য করোনার মধ্যেও পোশাক কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। এখন যদি গ্যাসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাহলে পোশাক রপ্তানিও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে।
কারখানার মালিকেরা বলছেন, সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দিতে না পারলে কোটি কোটি ডলারের রপ্তানির আদেশ বাতিল হয়ে যাবে।
কারখানা মালিকেরা দ্রুত গ্যাস সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, সাভার ও আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রমাণ খুব সম্প্রতি তিতাসের অভিযানে মিলেছে।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সাভারের আশুলিয়ায় অবৈধ ছয় শতাধিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। কুটুরিয়া ও দুর্গাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এ সময় জব্দ করা হয় নিম্নমানের পাইপ ও রাইজার। এ অভিযান পরিচালনা করেন সাভার তিতাসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম।
এর আগে বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকায় অভিযান চলে। সেখানে প্রায় এক হাজার বাসা বাড়ির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
বছরের শুরুতে আশুলিয়ায় চার শতাধিক অবৈধ গ্যাসসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তিতাস।
গ্যাস সরবরাহে নিয়োজিত সরকারি সংস্থা সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে গ্যাস সরবারহ কমে গেছে। এতে লাইনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে সাভার ও আশুলিয়া শিল্প এলাকায় গ্যাসের চাপ কম। তবে, এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।’