‘ত্রিশ বছরের পুরোনো মামলা আট দিনে সমাধান টানা সম্ভব নয়’
ত্রিশ বছর আগে খুন হওয়া সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার পুনর্তদন্তের দাবি করেছেন এই মামলার বিবাদী চার্জশিটভুক্ত আসামি সগিরার ভাশুর হাসান আলী চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদার ছেলে চৌধুরী দিলাবিজ মাহমুদ।
নিজের বাবা ও মাকে নির্দোষ দাবি করে দিলাবিজ বলেন, ‘ত্রিশ বছরের পুরোনো মামলা মাত্র আট দিনে সমাধান টানা সম্ভব নয়।’
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান দিলাবিজ। তাঁর দাবি, পুনর্তদন্ত করলে এই মামলার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।
ত্রিশ বছর আগে ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই কাকরাইলের উইলস লিটল স্কুলের সামনে খুন করা হয়েছিল সগিরা মোর্শেদকে। তাঁর বয়স ছিল ৩৪ বছর। তিনি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিস) গবেষক ছিলেন।
এই মামলার শেষ তদন্ত সংস্থা পিবিআই গত জানুয়ারি মাসের ২০ তারিখে সংবাদ সম্মেলনে এই হত্যার সহস্য উন্মোচন হয়েছে দাবি করে বলেছে, পারিবারিক কলহের জেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল সগিরাকে। স্কেচ করা আসামির ছবি রিকশাওয়ালার চিনতে পারাসহ পারিবারিহ কলহের বেশ কিছু কারণ দেখিয়ে চারজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় সংস্থাটি। হত্যার শিকার সগিরার অভিযুক্ত ভাশুরসহ চার আসামিই এখন কারাগারে আছেন। অন্য দুই আসামি হলেন মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদ।
পিবিআইর দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে মামলাটি পুনর্তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মামলার আসামি হাসান আলী চৌধুরী ও সায়েদাতুল মাহমুদার ছেলে চৌধুরী দিলাবিজ মাহমুদ। তাঁর মতে, এই মামলায় হত্যার কারণগুলো যা দেখানো হয়েছে, তা অমূলক।
দিলাবিজ বলেন, ‘যে ১৬৪ দেওয়া হয়েছে তা ছিল মিথ্যা, বানোয়াট ও পরিস্থিতির শিকার। উনারা মুখ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে কোনো একটা কথাও বলেননি। সেই ১৬৪ ছিল টাইপ করা। যেটা ছিল তদন্তকারী সংস্থার একটা টাইপ করা জিনিস। সেটাই ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দিয়ে দেওয়া হয়েছে; আসামি এ অনুযায়ী বক্তব্য দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘ত্রিশ বছর পরে পিবিআইর স্কেচ করা মামলার চতুর্থ আসামি মারুফ রেজার ছবি দেখে একবাক্যে চিনে ফেলা, মিথ্যা চিরকুটের প্রমাণ দিতে না পারা, ৩০ বছর আগের দেওয়া বাদীর জবানবন্দির সঙ্গে বর্তমান জবানবন্দির মিল না থাকা, এসব কিছুই প্রমাণ করে এই হত্যার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছে।’
দিলাবিজ বলেন, ‘খুনি আসলে কে? খুনি কি আমার আব্বা-আম্মা নাকি বাদীই নিজে কাউকে দিয়ে খুন করিয়েছে? নাকি উনার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নাকি থার্ড কোনো পার্টি?’ তিনি আরো বলেন, ‘এটা কি আসলেই একটা সাজানো নাটক দিয়ে আমার আব্বা-আম্মাকে এত দিন ধরে কাস্টডিতে ঢুকিয়ে রাখছে নাকি অন্য কোনো রহস্য আছে এর মধ্যে?’