দায় মেটাতে না পারলে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল : ইভ্যালি প্রসঙ্গে র‍্যাব

Looks like you've blocked notifications!
ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। ছবি : সংগৃহীত

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল এবং তাঁর স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তারের পর আজ শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘দেশি বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়সহ প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি অথবা দায় মেটাতে না পারলে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন সিইও রাসেল।’ র‍্যাবের লিগাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ইভ্যালির সিইও রাসেল জানান, ব্র্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি। পরে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বা দেশীয় বড় প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়সহ বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। এ উদ্দেশ্যে তাঁরা বিভিন্ন দেশও ভ্রমণ করেছেন। অন্যান্য পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে ছিল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির কাছে ওই কোম্পানি শেয়ারের অফার দিয়ে প্রলুব্ধ করে দায় চাপিয়ে দেওয়া। এ ছাড়া তিন বছর পূর্ণ হলে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে দায় চাপানোর পরিকল্পনা নেন। দায় মেটাতে বিভিন্ন অজুহাতে সময় বৃদ্ধি করার আবেদন একটি অপকৌশল মাত্র। সর্বশেষ তিনি দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে দেউলিয়া ঘোষণার পরিকল্পনা করেছিলেন।’

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘রাসেল জানিয়েছেন, তিনি পরিকল্পিতভাবে এই ব্যবসাটি করে আসছিলেন। এটি পরিবার নিয়ন্ত্রিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ছিল। প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্রে স্বচ্ছতা ছিল না। তা ছাড়া প্রতিষ্ঠানে কোনো জবাবদিহিতাও ছিল না। ফলে ক্রমান্বয়ে প্রতিষ্ঠানটির দায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। এবং বর্তমানে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। ইভ্যালির নেতিবাচক ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি উন্মোচিত হওয়ায় অনেক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এবং গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি থেকে সরে এসেছে। ব্যবসায়িক উত্তরণ নিয়ে তিনি নিজেও সন্দিহান ছিলেন। এর উত্তরণের ব্যাপারে তিনি আমাদের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বলতে পারেননি। রাসেল ও নাসরিনের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

র‍্যাব বলছে, ‘ইভ্যালির ব্যবসায়িক অবকাঠামো সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভাড়া করা স্পেসে ধানমণ্ডিতে প্রধান কার্যালয় এবং কাস্টমার কেয়ার স্থাপিত হয়। একইভাবে ভাড়া করা স্পেসে আমিন বাজার ও সাভারে দুটি ওয়্যারহাউজ চালু করা হয়। কোম্পানিতে একপর্যায়ে প্রায় দুই হাজার ব্যবস্থাপনা স্টাফ এবং এক হাজার ৭০০ অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ ছিল, যা ব্যবসায়িক অবনতিতে বর্তমানে যথাক্রমে স্টাফ এক হাজার ৩০০ জনে এবং অস্থায়ী পদে প্রায় ৫০০ জন কর্মচারীতে এসে দাঁড়িয়েছে। কর্মচারীদের একপর্যায়ে মোট মাসিক বেতন বাবদ দেওয়া হতো প্রায় পাঁচ কোটি টাকা; যা বর্তমানে এক দশমিক পাঁচ কোটিতে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন গ্রেপ্তার দুজন। গত জুন থেকে অনেকের বেতন বকেয়া রয়েছে। তিনি ও তাঁর স্ত্রী পদাধিকারবলে নিজেরা মাসিক পাঁচ লাখ টাকা করে বেতন নিয়ে থাকেন।’