দিনাজপুরে ওএমএস কার্ডের ফরমের জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ
বিশেষ ওএমএস পরিবারভিত্তিক রেশনিং কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ফরম বিক্রির অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। দিনাজপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানোয়ার হোসেন সরকারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়েছে।
দেশের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দরিদ্র মানুষের কষ্ট লাঘবে বর্তমান সরকার বিশেষ ওএমএস পরিবারভিত্তিক রেশন কার্ড দেওয়ার জন্য কাজ করছে। সারা দেশের মতো তিন দিন আগ থেকে দিনাজপুর পৌর এলাকায় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলদের নির্দিষ্ট সংখ্যক ফরম বিতরণের নির্দেশ থাকলেও তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক প্রতিনিধি নিয়োগের মাধ্যমে অসংখ্য ফরম বিক্রি করে আর্থিক সুবিধা আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারিভাবে এসব ফরম বিতরণের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে বিতরণের নির্দেশনা থাকলেও এ নির্দেশ মানা হচ্ছে না।
দিনাজপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মিশনরোড, চাতরাপাড়া এবং দপ্তরিপাড়া মহল্লার বহু মানুষের অভিযোগ, করোনা মোকাবিলায় সরকার যখন মানুষকে সাহায্যের জন্য ত্রাণ এবং ওএমএস রেশনিং ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে এসেছে, তখন সামান্য একটি ফরমের জন্য কয়েক হাজার অসহায় দরিদ্র লোকের কাছে ফরমপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে নিচ্ছেন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সানোয়ার হোসেন ও তাঁর লোকজন।
মিশনরোড মহল্লার বাসিন্দা সরকারি ঠিকাদার মো. আনোয়ার হোসেন, রাবেয়া বেওয়া, মৌসুমী বেগমসহ অনেকেই জানান, ফরমের জন্য কাউন্সিলর সানোয়ার হোসেন সরকার অতিদরিদ্র মানুষের কাছে টাকা নিচ্ছেন এটা একেবারেই অন্যায়।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর সানোয়ার হোসেন সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ফরমের জন্য টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমার নির্বাচনী প্রতিপক্ষের লোকজন চক্রান্তমূলকভাবে মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।’ তবে তিনি বলেন, ‘এই দুর্যোগের সময় আমাকে সহযোগিতা করার জন্য মো. জিয়াউর রহমানসহ আরো একজনকে এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার জন্য পরিচয়পত্র দিয়েছি।’
তবে তাঁর নিয়োগ করা স্বেচ্ছাসেবক জিয়াউর রহমানকে দিনাজপুর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরিয়ার রহমান মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পৌরসভায় মোট ছয় হাজার মানুষকে রেশনিং কার্ডের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে । ১২টি ওয়ার্ডেই কাউন্সিলরদের মাধ্যমে বিন্যামূল্যে ফরম বিতরণ করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররা কার্ডটি বিতরণ করবেন।’
মেয়র আরো বলেন, ‘ফরম বিনামূল্যেই দেওয়ার কথা, বিক্রির জন্য নয়। কারা টাকা নিয়ে ফরম বিক্রি করেছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। কেউ আমাকে অভিযোগও করেনি।’