দিনাজপুরে কনকনে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
দিনাজপুরে হাড়কাঁপানো কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে মানুষের পাশাপাশি গরু-ছাগল, কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য পশুপাখিরাও বিপাকে পড়েছে। আজ সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশদিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানুয়ারির শুরু থেকে উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে এই জনপদের মানুষজন ও পশুপাখি কাবু হয়ে পড়েছে। হিমেল হাওয়ার কারণে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে তারা বাইরে কাজে যেতে পারছে না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে জীবনযাপন করছে।
কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে রাস্তাঘাট। ফলে দিনের বেলায়ও যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুব কম সময়ই সূর্যের দেখা মিলছে। দুপুরের দিকে অল্প সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও ক্ষণিকে তা আবার হারিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত গোটা দিনাজপুর কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকছে। সন্ধ্যার পর বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। বেশিরভাগ দোকানিও দোকান বন্ধ করে ঘরে চলে যায়।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতালে শীতজণিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এই দুটি হাসপাতাল ছাড়াও জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও শীতজনিত আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ফলে এসব হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
অপরদিকে জেলার ছিন্নমূল ও গরীব-অসহায় মানুষের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ধনাঢ্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ৮০ হাজার পিস কম্বল গরীব-অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৭০ হাজার পিস কম্বল চেয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে জরুরিবার্তা পাঠানো হয়েছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, আজ সোমবার দিনাজপুরে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা আরও দু-একদিন থাকতে পারে।