দুঃশাসনের বিপক্ষে গণজোয়ার শুরু হয়েছে : ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘চারদিকে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার শুরু হয়েছে, দুঃশাসনের বিপক্ষে গণজোয়ার শুরু হয়েছে। এই দুঃশাসনের বিপক্ষে আপনারা আগামী ১ ফেব্রুয়ারি স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষে ভোট দেবেন। এই জনস্রোত দেখে নির্বাচন এবং বিএনপির বিজয়কে বানচাল করার যে ষড়যন্ত্র অপচেষ্টা করা হচ্ছে, সেটা কখনোই সফল হবে না।’
আজ শুক্রবার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদাবাদ (জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম) মাদ্রাসায় জুমার নামাজ আদায় শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ইশরাক হোসেন।
আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন ইশরাক হোসেন।
এ ব্যাপারে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আগামী ২৭ জানুয়ারি আমার নির্বাচনী ইশতেহারের দিন ঠিক করেছি। আমি যে প্রত্যেকদিন কথা বলতেছি, বক্তব্য দিচ্ছি, আমার প্রতিপক্ষের লোকেরা বিন্দুমাত্র ধারণা রাখে না। আমি প্রত্যেক দিনই ঢাকাবাসীর জন্য নানা পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছি; কিন্তু তারা হয়তো এগুলো শুনছে না। কারণ তারা তো ব্যর্থ।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত ১৩ বছর ধরে তাদের দল (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায়। গত নয় বছর ধরে নগরের দায়িত্বে তারা আছে। কিন্তু তারা তো এখনো নগরের কোনো পরিবর্তন করতে পারে নাই। আর কোনো ধরনের পরিবর্তন করতে পারবে মনে হয় না। তারা জবাব দেওয়ার কোনো প্রয়োজন মনে করে না। কারণ তারা জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। সুতরাং তারা এই নগরের জন্য জনগণের জন্য কিছুই করতে পারবে না বলে আমরা মনে করি না।’
ইশরাক বলেন, ‘আজ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। আমি উনার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ওনার পরিবারের দুঃখটা আমি খুব ভালো করে বুঝি। কারণ, আমার বাবা প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। উনাকেও এই বাংলাদেশে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে দেওয়া হয় নাই শুধু বিরোধী দলের রাজনীতি করার কারণে। আমি কিছু বলতে চাই না, জনগণ দেখছে। মহান আল্লাহতায়ালা এগুলো দেখছেন। উনি যথা সময়ে এর বিচার করবেন।’
নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আচরণবিধি লঙ্ঘনে কোনো নোটিশ পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে বিএনপির এই প্রার্থী বলেন, ‘আমি এমন ধরনের কোনো নোটিশ পাইনি। আমার আইনজীবী যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমার প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হচ্ছে। সেখান থেকে জানতে পারছি এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নোটিশ পাইনি।’
ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো উন্নয়নে আপনি কতটুক কাজ করেন—এমন প্রশ্নে ইশরাক বলেন, ‘আমি আমার বাবার রাজনৈতিক আদর্শটাকে মনেপ্রাণে ধারণ করি। আমি বলতে চাই, আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশে বসবাস করি। অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিশ্বাস করি। দীর্ঘকাল ধরে এই এলাকায় আমরা হিন্দু ও মুসলমান একসঙ্গে বসবাস করে আসছি। এই জায়গায় আমরা কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তিকে এখানে স্থান দিই নাই। আগামীতেও দেব না।’
পরে ফরিদাবাদে দয়াল বাবা মোতালেব শাহ (রা.)-এর মাজার জিয়ারত করে পনেরোতম দিনের প্রচারণা শুরু করেন ইশরাক। সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে ৪৫ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ড এবং ওয়ারী থানাধীন ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণা ও গণসংযোগ করে গোপীবাগ বাসভবনে এসে দিনের প্রচারণা শেষ করবেন বিএনপির এই প্রার্থী।
প্রচারণা অংশ নিতে সকাল থেকেই দলীয় কর্মী-সমর্থকরা বাংলাবাজার ও ফরিদাবাদ এলাকায় জড়ো হন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।