দুই মামলা নিয়ে দেশে এলেন চিত্রনায়িকা মাহির স্বামী
চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির স্বামী গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী রকিব সরকার দুই মামলা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরেছেন। পবিত্র ওমরা পালন শেষে আজ রোববার (১৯ মার্চ) সকাল পৌনে ১০টার দিকে তিনি ঢাকায় হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
বিমানবন্দরে রকিব সরকারকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মাহিয়া মাহি। পরে তাঁরা বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় তাঁদের বাসভবনে চলে যান। রকিব সরকার নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রকিব সরকার বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই মিথ্যা মামলাগুলো আইনিভাবেই মোকাবিলা করব। সত্যের জয় হবেই। আমি কোনো অপরাধ করিনি, অন্যায় করিনি।’
এর আগে গতকাল শনিবার সকালে ওমরা পালন শেষে ঢাকায় আসেন রকিবের স্ত্রী মাহিয়া মাহি। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বাসন থানায় নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। বেলা পৌনে ২টার দিকে তাঁকে গাজীপুর জেলা কারাগারে নেওয়া হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে তাঁর আইনজীবীরা আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তাঁকে জামিন দেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কারামুক্ত হয়ে মাহি তাঁদের ফারিশতা রেস্টুরেন্টের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাঁর সঙ্গে মানবিক আচরণ করেনি। তিনি এক গ্লাস পানি চাইলে পুলিশ তাঁকে এক ঘণ্টা পর পানি দেয়। পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং অসুস্থ, প্রচণ্ড গরমে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাঁর। পুলিশ এসব কথার তোয়াক্কা না করে তখন তাকে বলছিল, এভাবেই যেতে হবে। তার পরও তাঁর প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয়। বিমানবন্দরে তাঁকে রিসিভ করতে যাওয়া কোনো স্বজনের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতে দেওয়া হয়নি।
মাহি জানান, ফেসবুক লাইভে তিনি পুলিশ প্রশাসন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি একজন ব্যক্তিকে নিয়ে কথা বলেছেন। ফেসবুক লাইভে এসে এভাবে কথা বলার কারণে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তিনি এসব ঘটনার বিচার দাবি করেন।
মাহি দাবি করেন, ‘অন্যায়ভাবে আমাদের গাড়ির শোরুমে হামলা ও ভাঙচুর করা হলো অথচ পুলিশ উল্টো আমাদের এবং আমাদের কর্মচারীদের নামে মামলা দিয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।’
তবে মাহি কারা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে অনেক সম্মান দেখিয়ে মানবিক আচরণ করেছেন বলেও জানান।
রকিব সরকারের পুরোনো ৩ মামলা সচল হচ্ছে
জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘রকিব সরকারের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। মামলাগুলোর ঘটনা সত্য। কিন্তু ওইসব মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় পুলিশ সেসব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। পুলিশ যেকোনো সময় মামলাগুলো সচল করতে পারে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে। আমরা মামলাগুলো খতিয়ে দেখছি। মামলাগুলোর কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। মামলা তিনটি হয়েছে জয়দেবপুর থানায়।