দুই লাখ টাকা জরিমানা : বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সহজ ডটকমের রিট

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্টের ফাইল ছবি

রেল খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার রনির অভিযোগের ভিত্তিতে সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। রিটে জরিমানার আদেশ স্থগিত চাওয়া হয়েছে। সহজ ডটকমের পক্ষে ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম এ রিট দায়ের করেন।

রিটে বাণিজ্য সচিব, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. খসরু জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।

গত ১৩ জুন রেলওয়ের ওয়েবসাইটে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার টিকেট কাটার চেষ্টা করেন মহিউদ্দিন রনি। অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে বিকাশ থেকে ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হয়। কিন্তু, পিন নম্বর দিয়ে সেটি নিশ্চিত করার আগেই বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে টিকেটের মূল্য কেটে নেওয়া হয়। অর্থাৎ, তিনি টিকেট পাননি, আবার টাকাও নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পর রনি কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে রেলওয়ের সার্ভার রুমে অভিযোগ করেন। সেখান থেকে কারণ হিসেবে জানানো হয়, সিস্টেমের কারণে এমন হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

রনির অভিযোগ, তখন তাঁর চোখের সামনে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তাঁর বুক করা ৬৮০ টাকার আসনটিই আরেক যাত্রীর কাছে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন স্টেশনের কম্পিউটার অপারেটর। এরপর ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে ১৪ ও ১৫ জুন দুবার অভিযোগ করেন তিনি।

তবে, রনির এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি সহজ ডটকমের। তাদের দাবি, টিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলা ছিল না। সোমবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সহজ ডটকমের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইটের সব নিয়ম ও শর্ত মেনেই রনিকে সেবা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী (যা টিকেটিং অ্যাপ ও ওয়েবসাইটেও উল্লেখ আছে) আট কর্মদিবসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও দ্রুততম সময়ে সেবা নিশ্চিত করায় রনি পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাঁর মোবাইল অ্যাকাউন্টে টিকেটের মূল্য বাবদ প্রদত্ত সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পেয়ে যান।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকেট কাউন্টারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন মহিউদ্দিন রনি। দাবি আদায়ে লংমার্চও করেন। রেলের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রনির এ কর্মসূচি বেশ আলোড়ন তৈরি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর সমর্থনে লেখালেখিও হয়। রাজনৈতিক নেতারাও তাঁকে সমর্থন যুগিয়েছেন।

রনির অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সভাকক্ষে শুনানি হয় ২০ জুলাই। শুনানি শেষে রেলের টিকেট বিক্রির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

জরিমানার সিদ্ধান্ত আসার পর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘তাঁর (রনি) এ অভিযোগ এবং দৃঢ় আন্দোলন ভোক্তা অধিকারের ব্যাপারে সবার চোখ খুলে দিয়েছে। ভোক্তার হয়রানি দ্রুত নিরসন করতে হবে। রনি টিকেটের জন্য পেমেন্ট করেও টিকেট পাননি এবং তিনি এর মধ্যে বসে না থেকে তাঁদের অফিসে গিয়েছেন এবং সেখানে যাওয়ার পর সহজ ডটকমের কর্মকর্তারা তাঁকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর বুক করা সিটই অন্য কারও কাছে বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। একজন ভোক্তা হিসেবে তাঁর অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে।’