দুর্যোগে এখন আর ঘরহারা হতে হয় না : দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
দুর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান আজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘দেশের দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষকে প্রধানমন্ত্রী ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুর্যোগ সহনীয় ঘর দেওয়া হয়েছে। এ ঘরগুলো হওয়ায় ঝড়, ঘূর্ণিঝড়, বন্যার সময় এখন মানুষকে আর ঘরহারা হতে হয় না, বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে হয় না। ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। চর অঞ্চলগুলোতেও ভিটি উঁচু করার প্রকল্প নেওয়ার কারণে ওখানেও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যেতে হয় না।’

আজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস ও প্রশমনে আগাম সতর্কবার্তা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দুর্যোগ মোকাবিলা ও হ্রাসের ক্ষেত্রে একজন অগ্রগামী প্রধানমন্ত্রী। আপনারা জানেন ১৯৭০-এর ১২ নভেম্বর সুপার সাইক্লোন আঘাত হেনেছিল প্রায় ১৯টি উপকূলীয় জেলায়। তখন ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তখন ১৯৭০ এর নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনে তিনি নির্বাচনি প্রচারণা বন্ধ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ছুটি যান এবং সেখানে অবস্থান করেন। সেখানে থেকে তিনি মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্হা করেন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্হাপনায় যে সফলতা ও সারা বিশ্বে বাংলাদেশ যে রোলমডেল, তার প্রধান কারণ দুর্যোগে মানুষের মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে আনা। যেখানে এক ঘূর্ণিঝড়ে এক লাখ ৩৮ হাজার লোক মারা গিয়েছিল, সেখানে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসার পর আগাম সতর্কবার্তার কারণে এ মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর চারটি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করেছি। এ ঘূর্ণিঝড় গুলোতে ২৪ লাখ, ২০ লাখ ও সাড়ে ১০ লাখ লোককে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছিলাম। এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নেমেছিল।’

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এবার সিত্রাংয়ে বিমডি সতর্কবার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ছয় ঘণ্টা পিছিয়ে ছিল। তবে জিএফএস একদম সঠিক তথ্য দিয়েছিল। আমরা সঠিক তথ্যটা নিয়েই মাঠ প্রশাসনকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলাম। সেভাবে লোকজনকে সরিয়ে এনে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে এসেছি। যেসময় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনে ত্রিপুরা চলে গেছে, আমি তখন প্রেস ব্রিফিংও করেছি যে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ে সেরকম ক্ষয়ক্ষতি হয় নাই, সেসময় বিএমডি বলতেছে যে ছয় ঘণ্টা পর ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে। আমি এটার প্রতিবাদ করেছি এবং সংস্কার করেছি। কাজেই আমাদের একটা সংস্থার ওপর নির্ভর করলে চলবে না, আশপাশে কিংবা আন্তর্জাতিক যে সংস্থা গুলো সতর্কবার্তা দেয় সবার সঙ্গে কাজ করতে হবে। দুর্যোগে আগাম সতর্কবার্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগাম সতর্কবার্তার কারণেই ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।’

ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের এ সেমিনারে অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, কোষাধ্যক্ষ কামালউদ্দীন আহমদ, লাইফ ও আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান খন্দকার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব। সেমিনারে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শাহেদুর রশিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম।