দেশটা কারো পারিবারিক সম্পত্তি নয় : ইশরাক

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার গোপীবাগে নিজ বাসভবনে নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএসসিসির বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। ছবি : এনটিভি

আসন্ন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার না করার জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কোনো প্রার্থী বা পরিবারের প্রভাব পড়বে না। কারণ, দেশটা কারো পারিবারিক সম্পত্তি না।’

আজ শনিবার গোপীবাগে নিজ বাসভবনে নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন ইশরাক।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, উনি (তাপস) একজন সজ্জন ব্যক্তি। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক এবং আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীর প্রতি আহ্বান থাকবে, নির্বাচনে কোনো প্রকার ইনফ্লুয়েন্স করবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর নির্বাচনী ফলাফল যা হবে, আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু এতে কারচুপি হলে জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’

নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকদের বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমার পাশে এখনো মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে একজন দাঁড়িয়ে আছেন। উনার নাম আমিনুল ইসলাম। উনি ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কামরাঙ্গীরচর এলাকার আমাদের একজন কর্মী। তিনি গতকাল শুক্রবার ধানের শীষ প্রতীকের প্রচার চালানোর সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। আর কে অস্বীকার করল বা না করল, সেটাতে কিছু যায় আসে না। বাস্তবতা তো থেকেই যায়। তাঁর মতো আরো অনেককেই আহত করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে আমাদের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীকেও ফিজিক্যালি আহত করা হয়েছে। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। তারপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। এরপরও তাঁরা বলবেন, সঠিক নয়।’

দেশটা কারো জমিদারি নয় উল্লেখ করে ডিএসসিসির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘আমরা কারো কথায় পরোয়া করি না। উনারা কী বললেন, না বললেন, সেটা তো কিছু যায় আসে না। যেটা দৃশ্যমান, সেটা তো আপনারা দেখছেন। এটা কারো নিজের দেশ না। এটা আমাদেরও দেশ। এখানে কারো জমিদারি চলবে না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সবার সমান অধিকার।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, ‘আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। আমার প্রতিপক্ষ কোন পরিবারের, সেটা আমি বড় করে দেখতে চাই না। কারণ, ওই দল থেকে যারা মনোনয়ন পাবে, সবাই তো দলের অবৈধ সুযোগ-সুবিধা পাবে, আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ, তারা তো রাষ্ট্রযন্ত্র দলীয়করণ করেছে। আর কে কোন পরিবারের, সেটা আমার দেখার বিষয় না। এই দেশটার মালিক হচ্ছে জনগণ। এ দেশটা কারো পরিবারের সম্পত্তি নয়। আমি শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই স্বৈরাচারকে বিদায় করব।’

ভোটারদের প্রসঙ্গে ইশরাক বলেন, “খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্রথম দিকের প্রচারে তাঁরা আমাদের বলেছিলেন, ‘আমরা কি ভোট দিতে পারব?’ তারা গত নির্বাচনের আলোকে তাঁদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এবার যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তাঁরা নিজেরাই সংকল্পবদ্ধ হয়েছেন, এবার ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং ধানের শীষে ভোট দিবেন।”

ভোটকেন্দ্রে পাহারা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মনোনীত এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে পাহারা বলতে কোনো কিছু নেই। কেউ যদি বলে থাকে, সেটা ইনফরমাল ল্যাঙ্গুয়েজ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়। এবারও আমরা সেটা করব। এবার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাঁরা নিযুক্ত থাকবেন, তাঁরা সততার সঙ্গে এবং জনগণের সঙ্গে কাজ করবেন বলে আমি আশা করি। কারণ, তাঁদের দায়বদ্ধতা রয়েছে জনগণের প্রতি। তাঁরা কোনো দলীয় ক্যাডার বাহিনী নয়। আমরা তাঁদের সহযোগিতা করব। আমরা আশা করছি, সবার সার্বিক সহযোগিতায় একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে।’