‘দেশটা তলাবিহীন ঝুড়ি না, কেন নারীশ্রমিক বিদেশে পাঠাতে হবে?’

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। ছবি : সংগৃহীত

বিদেশে, বিশেষ করে সৌদি আরবে নারীশ্রমিক পাঠানো প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আমরা আমাদের মা বোনদের নিয়ে ব্যবসা করতে পারি না। দেশটা তলাবিহীন ঝুড়ি না, কেন নারীশ্রমিক বিদেশে পাঠাতে হবে? এটা বন্ধ করুন অবিলম্বে।’

কাজী ফিরোজ রশীদ আরো বলেন, ‘মা-বোনদের পাঠিয়ে দিয়ে দেশ বিক্রির টাকার প্রয়োজন নেই। মা-বোনদের ইজ্জত বেচে আমাদের টাকার প্রয়োজন নেই। আমরা আমাদের ইজ্জত বিক্রি করতে পারি না।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সম্পূরক প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন ফিরোজ রশীদ।

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘প্রবাসী ও বৈদেশিক মন্ত্রীদের দায়িত্বটা কী? আমাদের দেশের মা-বোনদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেখান থেকে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে, নানা রকম অন্যায়-অত্যাচারের শিকার হয়ে অবশেষে তারা লাশ হয়ে ফিরে আসে। এ যাবত ছয়-সাতশ মানুষ লাশ হয়ে ফিরে এসেছে। তাদের সবার ময়নাতদন্তে লেখা থাকে এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। ওখানে যে ময়নাতদন্ত হয় তা বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি পর্যন্ত দেখে না। এখানে অ্যাম্বাসি কোনো পদক্ষেপ নেয় না বৈদেশিক মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ নেয় না। রিক্রুটিং এজেন্টরা, দালালেরা নারীদের পাঠিয়ে খালাস । আমরা আমাদের মা-বোনদের নিয়ে ব্যবসা করতে পারি না। এটা স্বাধীন দেশ। আমাদের সম্মান আছে, ইজ্জত আছে। মাত্র কয়েকটি টাকার জন্য আমরা এ কাজ করতে পারি না। আমাদের দেশটা এখন আর অত গরিব না। আমরা তো তলাবিহীন ঝুড়ি না। কেন নারী শ্রমিক  পাঠাতে হবে? এটা বন্ধ করুন অবিলম্বে।’

ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আপনি দেখেন নাই এক একজন নারী ফিরে আসে আর তাদের কীভাবে অন্যায় অত্যাচার করা হয়। আপনাদের ঘরে মা বোন নেই? কেন আমরা কয়েকটা টাকার জন্য ওদের পাঠাব? নারীদের পাঠানো সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। আমাদের মন্ত্রী কোনো খবর রাখেন না। সেখানে নারী রীতিমতো বেচাকেনা হচ্ছে। দালালেরা পাঠাইয়া খালাস।’

ফিরোজ রশীদের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, ‘মাঠের বক্তৃতা সুন্দরই শুনলাম। কথা হলো মন্ত্রী কিছু জানে না বা মন্ত্রী কিছু করে না বা ওই মন্ত্রণালয় কিছুই করে না বক্তৃতাটা ওই মাঠের বক্তব্যর মতোই। আমি হাউজকে জানাতে চাই এই যে বিভিন্ন নারী ওইখান থেকে লাশ হয়ে আসছে আর যারা নির্যাতিত হয়ে আসছে, গত কয়েক মাসে অনিয়মের কারণে ১৬০টির এজেন্সির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তিনটি এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। তিন কোটি টাকার বেশি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স।’

মন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশি রিক্রুট এজেন্সিদের কাউন্টার পার্ট রয়েছে সৌদিতে, সেখানকার দায়িত্বরতদের বিস্তারিত জানাতে হচ্ছে মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য। তাদের যে পার্টনার আছে তাদের বিস্তারিত দিতে বলা হয়েছে।’