দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন বঙ্গমাতা : পরিবেশমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। ছবি : এনটিভি

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের জন্য তাঁর সারাটি জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি বঙ্গমাতাও দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণীই ছিলেন না, ছিলেন সহযোদ্ধা ও কর্মপ্রেরণাদাত্রী।

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ সোমবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ ত্যাগী নারী পরিবারের সব দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতি গঠনে মনোনিবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। শুধু তা-ই নয়, রাজনীতির নানা দুঃসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকে দিয়েছিলেন গঠনমূলক পরামর্শ। মানবিক মর্যাদাসম্পন্ন, সংগ্রামী ও প্রতিবাদী এই সাহসী যোদ্ধা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য জীবনসঙ্গিনী হিসেবে জনগণকে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শক্তি, সাহস ও উদ্দীপনা যুগিয়েছিলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারাবাসকালে পরিবার ও দলের হাল ধরেছেন বঙ্গমাতা, জনগণের সাথে রেখেছেন নিবিড় যোগাযোগ। জেলখানা থেকে বঙ্গবন্ধুর সকল নির্দেশনা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কাছে তিনি নিয়ে আসতেন। আবার আন্দোলনের সকল ঘটনা জেল গেটে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জানাতেন। বিশেষ করে আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বনমন্ত্রী বলেন, আত্মপ্রত্যয়ী, অতুলনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই বীরযোদ্ধা সকলের কাছে ছিলেন অনুকরণীয়। তিনি ছিলেন জাতির পিতার সকল কাজের সাথী ও সহায়ক। জনগণের প্রতি তাঁর ভালবাসা ছিল অকুণ্ঠ ও অকৃত্রিম। আর তাই তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির বঙ্গমাতা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের প্রাক্কালে তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিজের সংগ্রামী জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে স্বাধীনভাবে বক্তব্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। বঙ্গমাতা তাঁর বুদ্ধি, দূরদর্শিতা ও রাজনীতি সম্পর্কে বাস্তবোচিত মূল্যায়ন এবং সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের কারণে হয়ে উঠেছেন স্বাধীনতার ইতিহাসের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। 

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলার ও স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস লিখতে হলে বঙ্গবন্ধুর পাশে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার নামটি লিখতে হবে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন। বঙ্গমাতার প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।

মন্ত্রাণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহান, বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন এর চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ।

আলোচনা অনুষ্ঠানের পর বন অধিদপ্তরের মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সকল দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তারা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।