দেশের প্রথম নৌপ্রধান ক্যাপ্টেন নুরুল হক আর নেই
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম নৌপ্রধান অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নুরুল হক আর নেই। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) গতকাল সোমবার রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার এ খবর জানানো হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত নৌপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মৃত্যুতে নৌবাহিনীর সর্বস্তরের সদস্য গভীর শোক প্রকাশ করেন।
আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর নৌ সদর দপ্তর মসজিদে জানাজা শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নুরুল হককে বনানীর সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ক্যাপ্টেন নুরুল হক তাঁর সুদীর্ঘ চাকরি জীবনে বিভিন্ন জাহাজ ও ঘাঁটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন পাকিস্তান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার অফিসার, ডেসট্রয়ার জাহাজে ইঞ্জিনিয়ার অফিসার, ঘাঁটির ইঞ্জিনিয়ার অফিসার ও ট্রেনিং স্কুলে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭২ সালে তৎকালীন পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করে বাংলাদেশের প্রথম নৌবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৯৭৩ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
ক্যাপ্টেন নুরুল হক ব্রিটেনের রয়েল নেভাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে ১৯৫৮ সালে বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স এবং ১৯৬১ সালে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং স্পেশালাইজেশন কোর্স সম্পন্ন করেন।
নুরুল হক ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৩৬ সালের ১২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৩ সালের ১ মে কোয়েটায় প্রি-ক্যাডেট ট্রেনিং স্কুলে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৫৩ সালের অক্টোবরে পাকিস্তান নেভি ক্যাডেট ট্রেনিং স্কুলে যোগ দেন। তিনি ১৯৫৪ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটেনের ব্রিটানিয়া রয়েল নেভাল কলেজ, ডর্থ মাউথে অবস্থিত ‘ট্রাম্প’ ও ‘ঈগল’ জাহাজ থেকে পেশাগত প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন। নুরুল হক ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটেন থেকে কমিশন লাভ করেন।