দেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে : কৃষিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
আজ শুক্রবার দুপুরে ব্রির প্রাঙ্গণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। ছবি : এনটিভি

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত হারভেস্ট যন্ত্রটি আমরা যদি স্থানীয়ভাবে তৈরি করে সারা দেশে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিপ্লব ঘটবে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষিকে লাভজনক করতে অনন্য ভূমিকা রাখবে।’

আজ শুক্রবার গাজীপুরে ব্রির চত্বরে প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের কার্যক্রম পরিদর্শনকালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রির বিজ্ঞানীরা নিজেরা গবেষণা করে ধান কাটার মেশিনটি উদ্ভাবন করেছে। এটি একটি অসাধারণ সাফল্য। এটির ধান কাটার ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে বেশি। দেশের ছোট ছোট জমিতে ব্যবহারের উপযোগী। বিদেশের ইয়ানমারসহ বিভিন্ন কম্বাইন হারভেস্টারের দাম ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা, আর এটির খরচ পড়বে ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা। হার্ভেস্ট লসও কম।’

উল্লেখ্য দেশের জমিতে ব্যবহারের সবচেয়ে উপযোগী ও সুলভ মূল্যের ধান কাটার যন্ত্র কম্বাইন হারভেস্টার উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা।

ব্রির বিজ্ঞানীরা জানান, তাদের উদ্ভাবিত ব্রি হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারের ইঞ্জিনটি বিদেশ থেকে আনা। অন্যান্য যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে তৈরি। এর ইঞ্জিনের ক্ষমতা ৮৭ হর্স পাওয়ার। ঘণ্টায় মেশিনটি ৩ থেকে ৪ বিঘা জমির ধান কাটতে পারে। জ্বালানি খরচ হয় ঘণ্টায় ৩ দশমিক ৫ থেকে ৪ লিটার। হারভেস্টিং লস শতকরা এক ভাগের কম। আর দাম পড়বে মাত্র ১২ থেকে ১৩ লাখ টাকা। খণ্ড খণ্ড জমিতেও ব্যবহার উপযোগী।

বিদেশ থেকে আমদানিকৃত যেকোন কম্বাইন হারভেস্টারের তুলনায় এটি ভালো বলে জানান ব্রির বিজ্ঞানীরা।

এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিদায়ী সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, সদ্য যোগদানকৃত সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্রির শ্রমিকদের নতুন আবাসিক ভবন

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ব্রির চত্বরে এর শ্রমিকদের জন্য নির্মিত পাঁচতলা নতুন আবাসিক ভবন ‘ব্রি শ্রমিক কলোনি ভবন’ উদ্বোধন করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কৃষি শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানীদের মেধা ও মনন আর কৃষি শ্রমিকদের শ্রম ও ঘামে দেশে শতাধিক উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। যা দেশের খাদ্য নিরপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর মতোই বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের শ্রমিক-মজুরদের দুঃখকষ্ট হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন। তাই মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসেবে শ্রমজীবী মানুষের আবাসনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ব্রির নবনির্মিত শ্রমিক কলোনি ভবনের একটি বাস্তব উদাহরণ।

একই দিন দুপুরে মন্ত্রী ব্রির প্রাঙ্গণে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক পুনর্মিলনীতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। সভায় বিদায়ী সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ও সদ্য যোগদানকৃত সচিব মো. সায়েদুল ইসলামকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

পুনর্মিলনীতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আবদুর রৌফ, হাসানুজ্জামান কল্লোল, ওয়াহিদা আক্তার, বলাই কৃষ্ণ হাজরা, আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ এনডিসি, মো. রেজাউল করিমসহ সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংস্থাপ্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।