দৈনিক ৩ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার

Looks like you've blocked notifications!
সারা দেশে অব্যাহত নারী ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। ছবি : স্টার মেইল

ঘরের সিঁধ কেটে শিশুকে ধর্ষণ, বেড়াতে গিয়ে দুই কিশোরী ধর্ষণের শিকার, ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, স্বামীর জন্য রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে স্ত্রীও ধর্ষণের শিকার- এ রকম বিভৎস ঘটনা প্রায় প্রতিদিন  ঘটছে। ছয় বছরের শিশু থেকে ষাটোর্ধ্ব নারী, কেউ-ই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

গত চার বছর আট মাসে ধর্ষণের শিকার হওয়া চার হাজার ৫৭৬ জন নারী ও শিশুর পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রতি মাসে গড়ে ৮১.৭১ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সেই হিসাবে দৈনিক প্রায় তিন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।

ধর্ষণের শিকার মোট চার হাজার ৫৭৬ জনের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ৩৪১ শিশু রয়েছে এবং এক হাজার ৯১৯ জনের বয়স ১৮ বছর পর্যন্ত।

এই যখন পরিসংখ্যান, তার মধ্যে সম্প্রতি নোয়াখালীতে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া, তার আগে সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে। দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরাও বিবৃতি দিচ্ছেন। কথা বলছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। এসব ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত থাকায় সরকারও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আইন সংশোধন করে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সারা দেশেই বিক্ষোভ করছে প্রতিবাদী মানুষ। সবশেষ জানা গেছে, সরকার মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৮৯ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। মানে, এ বছর প্রতি মাসে ১১১ জনের বেশি ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারি মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯৮ জন। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২৫৭ জন।

এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭৬ নারী ও শিশু, মে মাসে ৯৪ জন। জুন মাসে সেই হিসাব বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৭৪ জনে। জুলাই মাসে ১৪০ ও আগস্ট মাসে ১৪৮ জন। অর্থাৎ জুন, জুলাই ও আগস্টে গড়ে ১৫৪ জন করে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যেন করোনাকালেই বেড়েছে ধর্ষণের হার।

মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।  দেশের সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও এমন বিভৎস ঘটনা নিয়মিতই ঘটে চলায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, অপরাধ করার পরও অনেকে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। এতে ধর্ষণের মতো এই ধরনের অপরাধ বাড়ছে। সমাজে অপরাধ প্রবণতা বেড়ে গেলে তা যথাযথ ও আইনানুগ প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে বেশি এগিয়ে আসতে হবে।’

২০১৬ সালে ধর্ষণের পর হত্যার শিকার ৩৭ জন

আসকের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৬ সালে সারা দেশে ৭২৪ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে এককভাবে ধর্ষিত হয়েছে ৪৪৪ জন। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৯৭ জন। এর বাইরে ধর্ষণের ধরন জানা যায়নি এমন সংখ্যা রয়েছে ১৮ জনের। এ ছাড়া একই বছর ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে আরো ৬৫ নারীকে।

ওই বছর ৩৭ জন নারী-শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ধর্ষণের অপবাদ সইতে না পেরে আটজন আত্মহত্যা করেছে। বছরজুড়ে দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে মোট ৩৯৬টি ধর্ষণের মামলা হয়েছে।

এদিকে, ২০১৬ সালে ৪৪৬ জন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। যাদের বয়স শূন্য থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত। এদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ৫২ জন। ১৫৯ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ২৩৫ জনের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

২০১৭ সালে ধর্ষণের শিকার ৩৭৭ কিশোরী

২০১৭ সালে সারা দেশে ৮১৮ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে এককভাবে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৯০ নারী ও শিশু এবং ২০৬ জন সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধরন জানা যায়নি, এমন আরো ২২ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া একই বছর ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে আরো ১০৪ জনকে। ওই বছর ধর্ষণের পরে ৪৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ১১ জন। এসব ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে ৫১৭টি।

সেইসঙ্গে একই বছর ৩৭৭ জন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ৬০ জন। ১৪৪ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ১৭৩ জনের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

২০১৮ সালে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ২০৩ জন

২০১৮ সালে সারা দেশে ৭৩২ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে এককভাবে ধর্ষিত হয়েছে ৫০২ জন।  সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২০৩ নারী ও শিশু। আর ধরন জানা যায়নি এমন আরো ২৭ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। একই বছর ১০৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬৩ জনকে। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে আরো সাতজন। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে ৫০৯টি।

২০১৮ সালে ২৭১ জন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ৫১ জন। ১০৪ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ১১৬ জনের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

২০১৯ সালে রেকর্ড ধর্ষণের শিকার

২০১৯ সালে সারা দেশে রেকর্ড নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ওই বছর সারা দেশে এক হাজার ৪১৩ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এরমধ্যে একক ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক হাজার ৬৬ জন নারী। ৩২৭ জন নারী ও শিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধরন জানা যায়নি এমন আরো ২০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। একই বছর ২২৪ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৭৬ জনকে। আত্মহত্যা করেছে ১০ জন। এসব ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে ৯৯৯টি।

২০১৯ সালে ৫৬২ জন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ১১৮ জন। ২১০ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ২৩৪ জনের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

২০২০ সালে ৩০৩ জন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ছয় বছরের নিচে ৬০ জন। ১৩৩ জনের বয়স সাত থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। এ ছাড়া ১৭০ জনের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে।

এক মাসে ধর্ষণের আলোচিত ঘটনা

গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এক গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তাঁর স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখেন দেলোয়ার বাহিনীর বাদলসহ অন্যরা। এর পর তাঁরা গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় গৃহবধূ বাধা দিলে তাঁরা বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইল ফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভিডিওচিত্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পরে নির্যাতনের শিকার ওই নারী বাদী হয়ে গত ৪ অক্টোবর রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে বেগমগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। সেখানে নয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো সাত-আটজনকে আসামি করা হয়। এরই মধ্যে দুটি মামলার এজাহারভুক্ত চার আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের সাঁতারপুর গ্রামের এক রিকশাচালকের ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ করা হয়। মা-বাবার সঙ্গে ঘুমে ছিল শিশুটি। ঘরের সিঁদ কেটে শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে এক দুর্বৃত্ত। ধর্ষণের পর শিশুটিকে তার বাড়ির পাশের একটি ধানক্ষেতে ফেলে যায়।

১৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মুমূর্ষু স্বামীকে বাঁচাতে রক্ত আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এনে স্বামীকে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন ওই নারী। মিরপুরের মণিপুরীপাড়ার শিফা ভিলার মাশনু আরা বেগম শিল্পীর বাসায় নিয়ে তাঁকে মনোয়ার হোসেন সজীব নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেন। পরে ভুক্তভোগীর স্বামীর এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সজীব ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে শিল্পীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়ন এলাকায় ঘরে প্রবেশ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। মুখে মাস্ক পরে পরিবারের সবাইকে বেঁধে ওই তরুণীর ওপর নির্যাতন চালায় দুর্বৃত্তরা। নয়জন মিলে অসহায় এই মেয়েকে ধর্ষণের পর তারা ওই বাড়ির নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ আরো অনেক কিছু লুটে নিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। তাঁর স্বামীকে গাড়িতে আটকে রেখে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। কলেজ ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় ও নিন্দার ঝড় বইছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই কক্ষে থাকা ছাত্রলীগের একটি পক্ষের ছয় থেকে সাত জন কর্মী এ ঘটনা ঘটায়। ঘটনার পর পরই ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

আইন প্রয়োগের পাশাপাশি দরকার সামাজিক সচেতনতা

নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক সচেতনতার ওপর জোর দিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশর চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে আরো কঠোর হতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সামাজিক সচেতনতা দরকার। এই শিক্ষাটি একেবারে পরিবার থেকে দিতে হবে। ধর্ষণের মতো একটি ভয়ঙ্কর অপরাধের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। আমরা আর একটিও ধর্ষণ দেখতে চাই না সমাজে। আমাদের নারীরা কেন ভয়ে ভয়ে চলবে সব সময়?’

করোনাকালেও দেশব্যাপী চাঞ্চল্যকর ধর্ষণের ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সংগঠনগুলো জানিয়েছে, দেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। ধর্ষণের ঘটনায় মামলা থেকে শুরু করে তদন্ত, বিচার সবখানেই নারীকে প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অনেক সময় ভুক্তভোগী বাদীকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পরতে হয়। অন্যদিকে ধর্ষক যদি প্রভাবশালী হয় তাহলে ভুক্তভোগীকে উল্টো নানান চাপের মধ্যে থাকতে হয়। ফলে এক সময় বাধ্য হয়ে বাদী-বিবাদীর সঙ্গে আপোষ করে মামলা তুলে নেয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলাজি অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস বিভাগের অধ্যাপক জিয়া রহমান বলেন, ‘একজন ধর্ষক কোন দলের তা দেখে বিচার হলে এই ধর্ষণ প্রবণতা আরো বেড়ে যাবে। কারণ তখন অপরাধীর মনে এই ভিত্তি গড়ে যাবে যে, তার কিছুই হবে না। সুতরাং আমাদের পুরো রাষ্ট্রকে এসব নিয়ে ভাবা উচিত। ধর্ষণের মতো কঠিন অপরাধের বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় নয়। তাহলে যদি এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্ষণের মামলাগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশনা দেওয়া আছে পুলিশ কর্মকর্তাদের। আমরা দেখিও তাই। কিন্তু কখনো কখনো দেখা যায়, মামলার একপর্যায়ে গিয়ে বাদীই নানা কারণে তদন্তে অহযোগিতা করা শুরু করে।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মহাসচিব মো. নূর খান বলেন, ‘নারীরা হেনস্তা বা র্ধষণের শিকার যেভাবে হচ্ছে, এটার পেছনে এক ধরনের ক্ষমতার যোগাযোগ আছে। সেটি পেশিশক্তি হোক, অর্থনৈতিক শক্তি হোক আর রাজনৈতিক শক্তি হোক। তবে এটি স্পষ্টতই বোঝা যায়, রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পার পাওয়ার সুযোগ থাকে না।’