নওগাঁয় ফায়ার ফাইটার ছেলের অপেক্ষায় মা

Looks like you've blocked notifications!
নিখোঁজ ফায়ার ফাইটার নওগাঁ শহরের চকপাথুরিয়া ফকিরপাড়া মহল্লার রবিউল ইসলাম। ছবি : সংগৃহীত

নওগাঁ শহরের চকপাথুরিয়া ফকিরপাড়া মহল্লার ছেলে ফায়ার ফাইটার রবিউল ইসলাম। তিনি সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনে ফায়ার ফাইটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আগুন নেভানোর কাজে তিনিও অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে নিখোঁজ।

ছেলের শোকে কাতর মা ফাইমা খাতুন বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার রবিন আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলল, মা সীতাকুণ্ডে একটা কারখানায় আগুন লাগছে। আমি ডিউটিতে যাচ্ছি। দোয়া কইরো। এইটাই শেষ কথা।’

ফাইমা খাতুন আরও বলেন, শনিবার রাতে শহরে এক আত্মীয়র বাড়িতে ছিলাম। রাতে ছেলের সঙ্গে আর কথা হয়নি। ভোর ৫টার দিকে ছেলেকে ফোন দিলে ফায়ার স্টেশন অফিসে যে ডিউটিতে ছিলেন তিনি রিসিভ করে। ওই লোক বলেন, রবিউল ডিউটিতে গেছে তাঁর জন্য দোয়া কইরেন। সকাল ৯টার দিকে বাসায় এসে টেলিভিশন চালু করে দেখি আগুনের সংবাদ। অনেক লোক মারা গেছে।

এরপর আর কথা বলতে পারেন না ফাইমা খাতুন, কাঁদতে থাকেন।

গতকাল রোববার সকালে টেলিভিশনে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে হতাহতের খবর দেখে রবিউলের এক বন্ধু মুঠোফোনে রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরে ফোনে তাঁকে না পেয়ে তার বাবা খাদেমুল ইসলামকে ফোন দেন। ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার খবর শুনে খাদেমুল ইসলাম ছেলের মুঠোফোনে ফোন দিলে সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের এক সহকর্মী সেই ফোন রিসিভ করে জানান, রাতে আগুন নেভানোর সময় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই বিস্ফোরণের পর থেকে রবিউলকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ছেলের খোঁজ নিতে গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছোট ছেলে রনি ও সাইদুর রহমান নামে এক প্রতিবেশিকে নিয়ে রওনা দেন খাদেমুল ইসলাম। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পুড়ে যাওয়া চারটি লাশ রয়েছে। কিন্তু লাশগুলো বীভৎসভাবে পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। মরদেহ শনাক্তের জন্য রবিউলের বাবার শরীর থেকে ডিএনএ’র নমুনা নিয়েছে সিআইডি।

রবিউল ইসলামের চাচা নাজিম উদ্দিন বলেন, বড় ভাইয়ের তিন ছেলেমেয়ে। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছে। বড় ভাতিজাকে নিয়ে ভাইয়ের অনেক স্বপ্ন ছিল। কিছুদিন পর নতুন করে আলাদা বাড়ি করার কথা ছিল।