নওগাঁয় বিজিবির কাছে ২৯৩ চোরাকারবারির আত্মসমর্পণ

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁর পোরশায় বিজিবি কর্মকর্তাদের কাছে সীমান্ত এলাকায় মাদক ও গরু চোরাচালানসহ বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধের সঙ্গে জড়িত ২৯৩ ব্যক্তি গতকাল শনিবার স্বাক্ষরিত কাগজ তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। ছবি : এনটিভি

নওগাঁর পোরশায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বাহিনীর কাছে সীমান্ত এলাকায় মাদক ও গরু চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ২৯৩ ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমান্ত চৌকিসংলগ্ন মাঠে এ আত্মসমর্পণ সম্পন্ন হয়।

১৬ বিজিবি নওগাঁ ব্যাটালিয়ন এর আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে আত্মসমর্পণপত্র গ্রহণ করেন বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ১৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম আরিফুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহরাব হোসেন, নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহ মো. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

পোরশা উপজেলার নিতপুর, হাঁপানিয়া ও কলমুডাঙ্গা সীমান্ত চৌকির বিজিবি কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে পোরশা ও সাপাহার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত ২৯৩ ব্যক্তি আত্মসমর্পণ করেন।

আত্মসমর্পণ করা নিতপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমি গরু চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত ছিলাম। এত দিন আমি অন্ধকার জগতের মানুষ ছিলাম। সমাজের মানুষ ভালোভাবে দেখত না, ঘৃণা করত। জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে সীমান্ত পার হয়ে গরু আনা-নেওয়া করতে হতো। কিন্তু আজ শপথ নেওয়ার মাধ্যমে সেই অন্ধকার জগৎ ছেড়ে আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’

প্রধান অতিথি বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, ‘আমাদের দেশের লোক আরেক দেশে গিয়ে গ্রেপ্তার হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে, বুলেটবিদ্ধ হয়ে লাশ হয়ে দেশে ফিরে আসছে; তখন আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। সীমান্তরক্ষী বাহিনী কখনো চায় না, সীমান্ত এলাকার মানুষ কষ্টে থাকুক। আপনাদের নিরাপত্তার জন্য বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে আজকে যাঁরা অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর পথে ফিরে আসলেন, তাঁদের সাধুবাদ জানাই। আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিরা তাঁদের শপথ ধরে রেখে দেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন—এই প্রত্যাশা করি।’ তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকার সীমান্ত অপরাধ বন্ধে অত্যন্ত কঠোর। কোনোভাবেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, এমন কাজ করতে দেবে না বিজিবি।’

কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ বলেন, ‘গত ২৪ জানুয়ারি ভারত থেকে গরু আনার পথে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত হন তিন বাংলাদেশি। এর পর থেকেই চোরাকারবারিদের ঘৃণিত ওই কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে কাজ করে আসছে বিজিবি। এরই ধারাবাহিকতায় পোরশা উপজেলার সীমান্ত এলাকার এই প্রথমবারের মতো ২৯৩ চোরাকারবারি স্বেচ্ছায় বিজিবির কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলেন।’