নকল চাবি দিয়ে গাড়ি চুরি, গ্রেপ্তার চার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে আটটি চোরাই গাড়িসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।
আজ রোববার ডিএমপির জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন নূরুল হক, আব্দুল আলিম ওরফে ইমন, হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান ও এ এইচ রুবেল। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে আটটি চোরাই প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি রাজধানীর কাফরুল ও গুলশান থানা এলাকাসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় গাড়ি চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। মিরপুর বিআরটিএ অফিসের রাস্তার বিপরীত পাশে থাকা একটি প্রাইভেট কার চুরির ঘটনায় গত ২১ জানুয়ারি কাফরুল থানায় মামলা হয়। পরবর্তী সময়ে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম উক্ত মামলার তদন্ত শুরু করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। পরে এই চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। গত ২৮ জানুয়ারি চোরাই প্রাইভেটকারসহ নূরুল হক (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃদের দেওয়া তথ্য মতে, ১২ মার্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা থেকে একটি চোরাই প্রাইভেটকার ও একটি মাইক্রোবাসসহ আব্দুল আলিম ওরফে ইমনকে (৩৩) গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৬ মার্চ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকে হৃদয় পাঠান ওরফে উজ্জ্বল পাঠান (২৯) ও এ এইচ রুবেলকে (৩৭) গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এ চক্রের সদস্যরা বেশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গাড়ি চুরির সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। চক্রের দুই থেকে তিনজনের একটি গ্রুপ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে টার্গেট গাড়ি খুঁজতে থাকে। টার্গেটকৃত গাড়ি পেলে সময় ও সুযোগ বুঝে কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে নকল চাবি দিয়ে গাড়ির দরজা খুলে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ছুটে যায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, পূর্বাচল অথবা কাঁচপুর ব্রিজের দিকে। সামনে ও পেছনে বাইক বা অন্য কোনো গাড়িতে থাকে এ চক্রের বাকি সদস্যরা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেখান থেকে তাদের একজন দক্ষ ড্রাইভার গাড়িটি পৌঁছে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ বা মৌলভীবাজারের চোরাই গাড়ি বিক্রির সিন্ডিকেটের কাছে। তারপর অন্য ড্রাইভার গাড়িটি নিয়ে চলে যায় সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায়। বিআরটিএর সিল-স্বাক্ষর জাল করে গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করা হয়। মূল মালিকের নামের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয় নকল দলিল অথবা বিজ্ঞ আদালতের সই স্বাক্ষর সম্বলিত নিলামের নকল কাগজপত্র। সহজ সরল লোকদের ভুলিয়ে ভালিয়ে তাদের কাছে অনেকটা কম মূল্যে গাড়িটি বিক্রি করে দেয়। এ চক্রের সদস্যরা কিছু কিছু গাড়ি দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট, ফেনসিডিল ও গাঁজা বহন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবার পরিচালনা করে গড়ে তোলে অপরাধের বিশাল সম্রাজ্য। আসামিদের সবাইকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।