নবাবের ‘নাতি’ পরিচয়ে প্রতারণা

Looks like you've blocked notifications!
আলী হাসান আসকারী। ছবি : সংগৃহীত

নিজেকে স্যার নবাব সলিমুল্লাহর ‘নাতি’ পরিচয় দিতেন নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী (৪৮)। তিনি আরো বলতেন, তাঁর বাবা সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের পরিচালক, দুবাইয়ে আছে তাঁর সোনার কারখানা। এটাও বলতেন, তাঁর বাবা ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান। অথচ, এসবই তাঁর ভুয়া পরিচয়। এই ভুয়া পরিচয়ে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে হাসপাতালে ৫০০ লোক নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আলী হাসান আসকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)।আসকারীসহ গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর তাঁর আরো পাঁচ সহযোগীকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন সিটিটিসির পরিদর্শক মো. হাফিজুর রহমান।

গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা হলেন— নবাবের নাতি পরিচয়দানকারী আলী হাসান আসকারী (৪৮), মো . রাশেদ ওরফে রহমত আলী ওরফে রাজা (৩৪), মীর রাকিব আফসার (২০), মো. সজীব ওরফে মীর রুবেল (৩৩), মো. আহম্মদ আলী (৩৮) ও মো. বরকত আলী ওরফে রানা (৩২)। তাঁদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত নবাব পরিবারের অ্যামবুশ সিল, ওয়াকিটকি সেট, বেতারযন্ত্র, ভিওআইপি সরঞ্জাম, ল্যাপটপ, একাধিক মোবাইল, সিমকার্ড, মেডিকেল রিপোর্ট ও পাসপোর্টের কপি ও বিভিন্ন ভুয়া কোম্পানির লিফলেট উদ্ধার করা হয় বলে সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে।

হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মোহাম্মদপুর থানায় গত ২৪ অক্টোবর বিদেশে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা হয়। প্রতারণার শিকার ও মামলার বাদী ফেনীর স্কুলশিক্ষক আবদুল আহাদ সালমান। ওই মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে সবাইকে।’

মামলার এজাহারের বরাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ৫০০ লোক নিয়োগ দেওয়া হবে মর্মে মামলার বাদীকে বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোক সংগ্রহ করতে বলেন আলী হাসান আসকারী। তাঁর কথায় বিশ্বাস করে বাদী বিদেশ যেতে আগ্রহী ৪০০ লোকের কাছ থেকে তিন কোটি ৩৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাঁকে দেন। টাকা পেয়ে কাউকে বিদেশে না পাঠিয়ে বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।’

কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান আরো বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা ১০ কোটি টাকার বেশি প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারক চক্রের প্রধান আলী হাসান আসকারী নিজেকে নবাব সলিমুল্লাহ খাঁনের নাতি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলতেন, পারিবারিক সম্পর্কের কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়মিত যাতায়াত ছিল তাঁর। বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গে নাকি তাঁর ভালো সম্পর্ক। অথচ এসবই ছিল ভুয়া, প্রতারণার অংশ। তাঁর ফেসবুকে নানা ধরনের ছবি দিয়ে প্রতারণার কাজে সেগুলো ব্যবহার করতেন। এর অংশ হিসেবে ফেসবুক প্রোফাইলে মন্ত্রী, এমপিসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলতেন।’