নাচ-গান-আবৃত্তিতে সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

Looks like you've blocked notifications!
সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সহিংসতাবিরোধী কনসার্টের’ আয়োজন করা হয়। ছবি : এনটিভি

দেশব্যাপী চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সহিংসতাবিরোধী কনসার্টের’ আয়োজন করা হয়। আজ শুক্রবার বিকেলে ‘সহিংসতার বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’র ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। 

কনসার্টে দেশের নামকরা ব্যান্ডগুলো ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একক ও সমবেত সঙ্গীত, মূকাভিনয় এবং নৃত্য পরিবেশন করেন।

কনসার্টে গান পরিবেশন করেন শিরোনামহীন, মেঘদল, সহজিয়া, শহরতলী, বাংলা ফাইভ, গানপোকা, গানকবি, কৃষ্ণপক্ষ, কাল, অবলিক, অর্জন, গঞ্জে ফেরেশতা এবং বুনোফুল। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন জয় শাহরিয়ার, তুহিন কান্তি দাস, সাহস মোস্তাফিজ, লালন মাহমুদ, তন্ময়, প্রিয়াঙ্কা পাণ্ডে, রাহিম, অর্ঘ্য, অর্চন, উদয়, অপু, উপায় এবং অনিন্দ্য।

নৃত্য পরিবেশন করেন উম্মে হাবিবা এবং আবু ইবনে রাফি। ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম একশন মূকাভিনয় পরিবেশন করে।

এদিকে, সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন। এ সময় তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ পাশ ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানায়।

আজ বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের ডাকে কর্মসূচিতে জাগো হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোট, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাসংঘ, ইন্টারন্যাশনাল শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশনসহ বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যার দিকে একটি মশাল মিছিলের মাধ্যমে তারা অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে।

প্রতিবাদী সংগঠনগুলোর দাবির মধ্যে রয়েছে জাতীয় সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৬০টি সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ করাসহ একজন উপ-রাষ্ট্রপতি ও একজন উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করা, দখলকৃত সব দেবোত্তর সম্পত্তি স্ব স্ব মঠ ও মন্দির হস্তান্তরসহ উদ্ধারকৃত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা জাদুঘরের পরিবর্তে মঠ-মন্দিরের কাছে ফেরত দেওয়া, সরকারি চাকরিতে ২০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি চালুসহ হিন্দু শিক্ষার্থীদের জন্য সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হিন্দু ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা এবং শারদীয় দুর্গাপূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি দেওয়াসহ নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে সংস্কৃত শিক্ষা পুনরায় চালু করা।

অবরোধ কর্মসূচিতে সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের সম্প্রতি পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

এ সময় তারা এদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ পাশ ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করার দাবিও জানান।

এর আগে, সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে সংগঠনগুলো।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই হামলার বিচার চাই। এর বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না। আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। এ সময় তারা আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শাহবাগে প্রতীকি অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তাপস পাল, জাতীয় হিন্দু ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায় প্রমুখ।