নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলা : আসামিদের ধরতে চলছে অভিযান

Looks like you've blocked notifications!
কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ঘটনাস্থলে র‍্যাবের সদস্যেরা। ফাইল ছবি

কক্সবাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে যাওয়া নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় তিন দিনেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে, মামলাটির তদন্ত প্রাথমিকভাবে দ্রুত এগোচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, ওই নারীর সঙ্গে আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের পূর্ব-পরিচয় ছিল। এ ছাড়া তিনি তিন মাস ধরে কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করছিলেন।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে সভা শেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জিল্লুর রহমান এ দাবি করেন।

মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘কক্সবাজারে আলোচিত নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্ত করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেওয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ওই নারীর মেডিকেল রিপোর্টের কাজসহ নানা প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এসপি মো. জিল্লুর রহমান আরও বলেন, ‘মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। বিশেষ করে ওইদিন রাতে ওই নারী আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের মোটরসাইকেলের পেছনে বসে হোটেল জিয়া গেস্ট ইন-এ যান। এ সময় অসংখ্য লোকজন ছিল। কিন্তু, ওই নারী কোনো ধরনের চিৎকার বা উঁচু বাক্য করেননি। আমরা চাই, মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে আসল ঘটনা উদঘাটিত হোক এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত হোক।’

এদিকে, ওই নারী পর্যটকের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে হাজির করে জবানবন্দি নেওয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজারের এসপি মো. হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘আলোচিত এই মামলাটি ভুক্তভোগীর অভিযোগ, আদালতের জবানবন্দি, মেডিকেল রিপোর্ট, সাক্ষীদের সাক্ষ্যসহ যাবতীয় বিষয় গুরুত্ব নিয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা তাদের সহযোগিতা করছি।’

কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনে অনেক অপরাধী রয়েছে স্বীকার করে এসপি হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কলাতলী হোটেল জোনে কেউ মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, আবার কেউ দালালি ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িত। আমরা সবগুলো বিষয় নিয়ে এগোচ্ছি। আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের সঙ্গে কারা জড়িত, তাঁর আয়ের উৎস কী এবং কার ইন্ধনে এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত—সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’

গত ২২ ডিসেম্বর বুধবার রাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে এক নারী পর্যটক ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে।

ওই নারীর ভাষ্য, ‘স্বামী-সন্তান নিয়ে ওইদিন সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছান তিনি। এরপর ওঠেন শহরের হলিডে সি-ল্যান্ডের ২০১ নম্বর কক্ষে। ওই দিন বিকেলে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে লাবণী বিচে যান তিনি। রাতে হোটেলে ফেরার পথে এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এতে স্বামীর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ওই যুবক। বাধা দিলে তাঁর সঙ্গেও তর্কে জড়ান তিনি। ওই সময় আরও দুই যুবক ঘটনাস্থলে হাজির হন। পরে তাঁরা স্বামী-সন্তানকে ইজিবাইকে তুলে দিয়ে ওই নারীকে আলাদা করে ফেলেন। পরে ওই এলাকার একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে তিন জন পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এরপর স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে শহরের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যান ওই যুবকেরা।’