নিখোঁজের ১১ মাস পর যুবকের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে মিলল কিশোরীর লাশ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/01/10/madaripur-death-l.jpg)
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় নিখোঁজের ১১ মাস পর সাহাবুদ্দিন আকন (২৫) নামের এক যুবকের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে মুর্শিদা আক্তার (১৬) নামের এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, সাহাবুদ্দিন আকনের সঙ্গে মুর্শিদার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উপজেলার ডাসার থানাধীন পূর্ব বোতলা গ্রাম থেকে গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মুর্শিদা আক্তার পূর্ব বোতলা গ্রামের চাঁনমিয়া হাওলাদারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, কালকিনি উপজেলার ডাসার থানাধীন পূর্ব বোতলা গ্রামের সাহাবুদ্দিন আকনের সঙ্গে একই গ্রামের মুর্শিদা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের সূত্র ধরেই গত বছরের ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি সকালে মুর্শিদাকে তাদের বাড়ি থেকে কৌশলে প্রেমিক সাহাবুদ্দিন আকন তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর থেকেই নিখোঁজ হয় মুর্শিদা। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতেই মুর্শিদার পরিবার ডাসার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এতে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় গত বছরের ৪ মার্চ সাহাবুদ্দিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে ডাসার থানায় একটি মামলা করেন মুর্শিদার মা মাহিনুর বেগম।
দীর্ঘদিন মামলার কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় গত ১৮ ডিসেম্বর মাদারীপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ মামলাটির তদন্ত ভার নেয়।
এর মধ্যেই গত ৩১ ডিসেম্বর মামলার প্রধান আসামি সাহাবুদ্দিন আকন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম আসামি সাহাবুদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর গতকাল শনিবার বিকেলে ডিবি পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন সাহাবুদ্দিন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাত ৮টার দিকে সাহাবুদ্দিনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের নিচ থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্যে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের মামা মিরাজ তালুকদার বলেন, ‘মুর্শিদা নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা ডাসার থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি ও পরে একটি মামলা করি। কিন্তু ডাসার থানার পুলিশের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিবি পুলিশের কাছে মামলা হস্তান্তরের পরে আসামি কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন। আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সেই অনুযায়ী আমার ভাগ্নির লাশ উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত—সাহাবুদ্দিন আকনসহ সবার ফাঁসি চাই।’
জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধুরী রেজাউল করিম বলেন, ‘পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে আমারা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ একটি টিম শনিবার রাতে আসামি সাহাবুদ্দিন আকনের বাড়িতে গিয়ে সেপটিক ট্যাংক ভেঙে তার নিচ থেকে মুর্শিদার লাশ উদ্ধার করি। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠাই। এ ঘটনার তথ্য উদঘাটনের জন্য আসামিকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’