নির্বাচন এলে অভিযোগের বাক্স খুলে বসা বিএনপির অভ্যাসগত স্বভাব : তথ্যমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘যেকোনো নির্বাচন এলে বিএনপি অভিযোগের বাক্স খুলে বসে। এটা তাদের চিরাচরিত নিয়ম। অনেকগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তারা জয়লাভ করেছে। জয়লাভ করার আগমুহূর্ত পর্যন্ত নানা অভিযোগ দিয়েছে তারা। যেইমাত্র জয়লাভ করেছে, তাদের মুখটা বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং, নির্বাচন এলে অভিযোগের বাক্স খুলে বসা বিএনপির অভ্যাসগত স্বভাব।’

চট্টগ্রাম নগরীর পোর্ট কানেক্টিং সড়কের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন শেষে আজ শনিবার সকালে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্বাচনগুলো পরিচালনা করছে, জনগণের দৃষ্টিতে তারা অত্যন্ত সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছে। দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। সুতরাং প্রযুক্তিনির্ভর অন্যান্য নির্বাচনগুলো যেমন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে হচ্ছে, এখানেও সেভাবে নির্বাচন হবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ পৃথিবীব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছেন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে, পাকিস্তানের টেলিভিশনের টকশোতে আলোচনা হয়, ‘আমাদের দয়া করে একজন শেখ হাসিনা দাও, আমাদের দেশকে বাংলাদেশ বানিয়ে দাও।’ আর ভারতের বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতে ব্যাপক আলোচনা হয়, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জিডিপি গ্রোথ রেটের ক্ষেত্রে এবং মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশ ও সমগ্র পৃথিবীব্যাপী প্রশংসিত হলেও দেশে একটি পক্ষ কখনো প্রশংসা করতে পারে না। প্রতিদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তি সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করতে পারেন না। তাঁদের বুদ্ধি আছে, কিন্তু আমাদের সরকার সম্পর্কে বলার সময় তাঁদের বুদ্ধি কেন লোপ পায়, সেটি বুঝতে পারি না। তারা যেভাবে কথা বলেন, দেশে যে এতো উন্নয়ন হয়েছে, সেটি তাঁরা দেখতে পান না। চোখ থাকতেও তাঁরা অন্ধ। নতুন বছরে আমার প্রত্যাশা থাকবে, তাঁদের চোখটা অন্ধের মতো কাজ করবে না, চোখ খুলে তাঁরা এসব বিষয় দেখবেন, এটিই হচ্ছে জনগণের প্রত্যাশা।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। পৌনে এক কোটি মানুষের শহর। এই শহরের উন্নয়নের সঙ্গে দেশের উন্নয়ন যুক্ত। চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে পুরো দেশের উন্নয়ন। সে কারণে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় চট্টগ্রামের উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এক বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ টাকা খরচ করে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রকল্প চলমান আছে। চট্টগ্রাম শহরের রাস্তাঘাটের উন্নয়নের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যে সব কাজ অসমাপ্ত ছিল, সেগুলো তিনি তিনি অল্প সময়ে ঠিকাদারদের তাগাদা দিয়ে, প্রশাসনিক নানা ব্যবস্থা নিয়ে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেছেন। পোর্ট কানেক্টিং রোডসহ আরো কয়েকটি রাস্তা তাঁর অন্যতম উদাহরণ।’

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আউটার রিং রোড হয়েছে, এই আউটার রিং রোডের সঙ্গে কানেক্টিং কিছু রোডের প্রয়োজন। বিদ্যমান প্রকল্পের পাশাপাশি সিডিএ নতুন প্রকল্প প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে, যাতে আউটার রিং রোডের সঙ্গে অন্তত তিনটি রাস্তা দিয়ে মূল শহরের সংযোগটা হয়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কর্ণফুলী বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আমরা আশা করছি, আগামী বছর কর্ণফুলী টানেল চালু করতে পারব। এটি উপমহাদেশে প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল রোড। প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান কিংবা নেপালে এ রকম টানেল নেই। প্রধানমন্ত্রী যে চট্টগ্রামকে গুরুত্ব দেন, এসব কাজ তারই বহিঃপ্রকাশ।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে বে-টার্মিনালের কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। সেটি নির্মিত হলে প্রকৃতপক্ষে আরেকটি নতুন চট্টগ্রাম বন্দর হবে। বর্তমান চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়েও অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন এবং অনেক বড় বন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে সেটি। এভাবে গত ১২ বছরে পুরো দেশের চিত্র বদলে গেছে।’

এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘চট্টগ্রাম পোর্ট কানেক্টিং রোড নিয়ে গত তিনটি বছর এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে ছিল। গত ছয় মাসে আমরা অনেক যুদ্ধ করেছি। এটি হচ্ছে চট্টগ্রামের লাইফ লাইন, চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে বাকি বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার তালিকার মধ্যে এটি অন্যতম। এটি নিয়ে গোটা দেশ উদ্বিগ্ন ছিল। এখন এটি দৃশ্যমান হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে আর কোনো ভাঙা রাস্তাঘাট খুঁজে পাবেন না। ভাঙা রাস্তাঘাট এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।’