নির্বাচন কমিশন ঠাট্টা মশকরার জায়গায় পরিণত হয়েছে : গয়েশ্বর

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় বক্তব্য দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ছবি : এনটিভি

নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা ঠাট্টা মশকরা করার জায়গায় পরিণত হয়েছে। সিইসি সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতোমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন।’

জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সভাপতি শফিউল বারী বাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় গয়েশ্বর এসব কথা বলেন। স্মরণসভার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক দল। 

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-তার বাড়ি ঘেরাও করতে গেলে তিনি আপ্যায়ন করাবেন, আপনার বাড়ি যদি কখনো কেউ ঘেরাও করতে যায়, চায়ের জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু পানি মজুদ আছে তো? নাই। চায়ের দাওয়াতের জন্য নয় যদি এদেশের জনগণ কখনো গণভবন ঘেরাও করতে যায়, তাহলে আপনার জিনিসপত্র গুছিয়ে গাড়িতে তুলে দিতে যাবে। আপনাকে বিদায় জানাতে যেতে পারে। হয়তো একটা সময় আপনি স্বইচ্ছায় না গেলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে এটা মনের অজান্তেই হয়তো বলেছেন ঘেরাও করতে গেলে চা খাওয়াতে পারে।'

তিনি বলেন, ‘গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়া এটা একান্তই হিউমার মশকরা-উত্তর অর্থাৎ হাসিনা ঠাট্টা করতেও জানেন। ঠাট্টা খালেদা জিয়ার সাথে করেন কিন্তু জাতির সঙ্গে যেটা মশকরা শুরু করেছেন ১৪ বছর ধরে, এর হিসাব একদিন না একদিন জনগণের কাছে দিতেই হবে।'

নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) তীব্র সমালোচনা করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটা ঠাট্টা মশকরা করার জায়গা। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা বলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদাকে ইতোমধ্যে হার মানিয়ে দিয়েছেন। যার কাজ সে করবে, নির্বাচন কমিশন এত কথা বলেন কেন?’

তিনি বলেন, 'কে নির্বাচনে আসবে কে আসবে না, তাতে কিছু আসে যায় না। এত দায়িত্ব আপনাদের (নির্বাচন কমিশন) দেয় নাই। হু আর ইউ? তুমি কে এই কথা বলার। রাজনৈতিক সমস্যার মীমাংসা হবে রাজনৈতিকভাবে, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন- সরকার চিন্তা করবে কীভাবে তারা জনগণের সঙ্গে মীমাংসা করবে। কীভাবে জনগণের পথ ফেরত দিবে সেই বিষয়। এই কাজটুকু ঠুঁটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের নয়। আমি আশা করব নো টক। শেখ হাসিনা যেদিন থাকবে না, তখন কি আপনাদেরকেও তাড়াতে হবে? কোন দিক দিয়ে পালাবেন, যতদিন দায়িত্বে আছেন, চুপচাপ বসে থাকেন, বেতন ভাতা খান। নির্বাচন, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র নিয়ে ছবক দেওয়ার অধিকার সাংবিধানিক এই পদে বসে আপনাকে দিতে কেউ দেয় নাই। আশা করি বাংলা কথাটা বুঝতে আপনার কষ্ট হবে না। আমরা যা করব, রাজপথে ফয়সালা করব, যা বলেছি হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাব না।’

সরকারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিচিত্র তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, 'এখন বিদ্যুৎ যায় না মাঝে মাঝে আসে। বিদ্যুৎ বলে আমি জীবিত আছি এখনো মরি নাই। এই সরকারের উন্নতি শেষ পর্যন্ত ঘরে ঘরে মোমবাতি। এই সরকার ঘরে ঘরে জনগণের হাতে হ্যারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বিদ্যুৎ নাই তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নামে টাকা গেল কোথায়? বিদ্যুতের জন্য যে টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ করা হয়েছে, লুট করা হয়েছে এর দায়ভার তো জনগণকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিদ্যুৎ পাবনা তাহলে আমরা সেই দিন পরিশোধ করবো কেন? যে সকল কোম্পানিকে কুইক রেন্টাল বেসিসে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন, তাদেরকে ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ দিয়েছেন, তাদের কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা ছিল, কতটুকু তারা করতে পেরেছেন কতটুকু সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন, তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। জনগণের সেই হিসাব চাওয়ার অধিকার আছে।'

অর্থমন্ত্রীকে আদম ব্যাপারী আখ্যা দিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'উনি বলেন আইএমএফ এর কাছে টাকা চাওয়া হয়নি। পত্রিকায় দেখলাম ভিতরে ভিতরে আবার তাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। আর আইএমএফ বলেছে, আপনারা কোন খাতে কত টাকা ব্যয় করেছেন তার একটা হিসাব দেন।'

তিনি বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান হচ্ছে জনগণের ভোট জনগণ দিবে, যাকে খুশি তাকে দিবে। দিনের ভোট দিনে দিবে। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিরাপদে ভোট দিব। একটা ফয়সালা করতে হবে রাজপথে। এর জন্য আমাদেরকে সেভাবেই এগুতে হবে।

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব প্রমুখ।