নেত্রকোনায় অটোরিকশা চালকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১

Looks like you've blocked notifications!
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে আটোরিকশাচালকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ। ছবি : এনটিভি

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরে চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে আটোরিকশা চালকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং পুলিশ, সাংবাদিক, শিশুসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষে গুরুতর আহত অটোরিকশাচালক নিজাম উদ্দিন (৩৫), সাইদুর রহমান (৩৮), হাসান মিয়া (৩৫), জোসেফ মিয়া (২২), স্কুলছাত্র আকাশ মিয়াকে (১৪) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে হাসান মিয়া নামে একজন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

অটোরিকশার ভাড়া ও স্ট্যান্ডের চাঁদা আদায় নিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা শহরের রেল স্টেশন এলাকায় দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে সাত পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়। এ সময় ভাঙচুর করা হয় অন্তত ১৫টি দোকান, কয়েকটি যানবাহন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ও ১০ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পৌর শহরের নওহাল বাস স্ট্যাশন থেকে আজ সকাল ১০টার দিকে একটি অটোরিকশায় কয়েকজন যাত্রী নিয়ে চালক রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় যান। পরে অটোরিকশার চাঁদা নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরামপুর গ্রামের এক অটোরিকশা চালককে বড়কাশিয়া গ্রামের কয়েকজন অটোরিকশাচালক মারধর করে। এ খবর পেয়ে বিরামপুর গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে বাজারে প্রবেশ করে বড়কাশিয়া গ্রামের অটোরিকশা চালকদের মারধর করতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুপুর ১২টার দিকে শুরু হয়ে দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। দুই পাশ থেকে ইট-পাটকেল ছুড়া শুরু হলে শহরে মোহনগঞ্জ স্টেশন রোড এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সামনে এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে মোহগনঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি এস এম সারোয়ার খোকন, মোহনগঞ্জ থানার উপপুরদর্শক (এসআই) মমতাজ উদ্দিন, রিশাত, শেখ রাসেল, কনস্টেবল আলমহীর, নীলু দাস, জাহাঙ্গীর কবীর, জাকির হোসেন, মাহমুদুল হাসান, উপজেলার মানশ্রী গ্রামের সাইদুর রহমান, বাকরপুর গ্রামের হাসান মিয়া, একই গ্রামের নিজাম উদ্দিন, ফেরিরচর গ্রামের জোসেফ মিয়া, মোহনগঞ্জ পৌর সভার দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের স্কুলছাত্র আকাশ মিয়া, পাশের বারহাট্টা উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের নয়ন মিয়াসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়। আহতদের মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান বলেন, সংঘর্ষে আহত একজন মারা গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা চলছে।