নেত্রকোনায় বাঁধ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ, থানায় মামলা

Looks like you've blocked notifications!
খালিয়াজুরীর মেন্দিপুর ইউনিয়নে নন্দের পেটনা বেড়িবাঁধ ভেঙে দেওয়ায় পানি প্রবেশ করছে হাওড়ে। ছবি : এনটিভি

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের ধান ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ কেটে ফেলা হলেও এখনো কয়েক হাজার হেক্টর জমির আধাপাকা ধান রয়েছে মাঠে। ফসল রক্ষায় বাঁধগুলো মেরামতে সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়েও দুশ্চিন্তা কাটেনি হাওরবাসীর। গতকাল সোমবার রাতে ফিসারিতে পানি প্রবেশ করাতে গিয়ে বাঁধ ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিমের বিরুদ্ধে।

নন্দের পেটনার বাঁধটি হাওরের ফসল রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অধীন। এই বাঁধ কয়েক বছর আগে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। বাঁধ এলাকার পাশে পেটনা ফিশারির ইজারা নেওয়া সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিম ও তার লোকজন সোমবার রাতে বাঁধটি ২০ ফুট কেটে দেয়। খবর পেয়ে এলাকার কৃষক ও জনতা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়।

বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় খালিয়াজুরীসহ পাশের মদন উপজেলার কিছু এলাকায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। দীর্ঘ এক মাস ধরেই হাওড়ের একমাত্র ফসল রক্ষায় বাঁধগুলো মেরামতে সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালায় এলাকাবাসীদের নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গতকাল সোমবার রাতে খালিয়াজুরীর মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুরে ফিসারিতে পানি প্রবেশ করাতে গিয়ে নন্দের পেটনা বেড়িবাঁধ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লোকমান হেকিমের বিরুদ্ধে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় কৃষকরা তা মেরামতে রাতদিন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানায়, পেটনা বিলে নতুন পানি ও মাছ প্রবেশ করাতেই বাঁধটি ভেঙে দিয়েছেন মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিম। বাঁধটি ভেঙে ফেলায় খালিয়াজুরীর মেহেন্দিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওরসহ পাশের মদন উপজেলার হাওর পানিতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনো রকমে ভেঙে যাওয়া বাঁধ আটকে রাখা হয়েছিল, আর এখন নিজেরা কেটে দিয়ে কৃষকদের ফসল ডুবিয়ে দেওয়ার পায়তাঁরা করছে। এই ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তারা। 

বাঁধ কেটে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, এটি নন্দের পেটনার বাঁধ। এটি ভাঙার কোনো কারণ ছিল না। এটিকে ফিশারির জন্য লিজ নেওয়া ইজারাদাররা ভেঙে ফেলেছে। বাঁধ মেরামতে পাউবোর কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাজে লাগিয়েছেন।

খালিয়াজুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম জানান, কেটে দেওয়া বাঁধ সবার সহযোগিতায় মেরামত করা হয়েছে। ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মজিবুর রহমান জানান, বাঁধ কাটার বিষয়ে অভিযোগকারী পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী ওবায়দুল হক থানায় এসে লোকমান হেকিমসহ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এদিকে ফসল রক্ষায় হাওরের বাঁধগুলো টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে  উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, আশা করছি ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।