নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি, ভিডিও ভাইরাল
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এক গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানি ও নির্যাতন করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা ওই ঘটনার ভিডিও করেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েও দিয়েছে। ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নির্যাতনের ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম খানের নেতৃত্বে আরেকটি তদন্তদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
গ্রেপ্তার হওয়া যুবকের নাম আবদুর রহিম (২২)। তাঁর বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বড়খালে। শ্লীলতাহানিতে জড়িত থাকা অন্য ব্যক্তিরা হলেন দেলোয়ার, বাদল ও কালাম।
একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বাসায় ২০ থেকে ২৫ দিন আগে এ ঘটনা ঘটলেও আজ রোববার গৃহবধূকে নির্যাতনের ওই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ভিডিওচিত্রে, ভুক্তভোগী গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে তাঁর মুখমণ্ডলে উপুর্যপুরি লাথি ও বেধড়ক মারধর করতে দেখা যায়। এসময় গৃহবধূ হামলাকারীদের বহুবার পায়ে ধরে এবং বাবা-বাবা বলে ডাকলেও নির্যাতন বন্ধ রাখা হয়নি। বরং তাঁর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানসহ সবস্থানে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক আহত করে। তারা এ সময় তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এলাকার বাদল, কালাম ও দেলোয়ারসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় থেকে দুই মাস আগে এলাকার একদল বখাটে ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেয় এবং শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করে। এভাবে তারা আরো কয়েকবার তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে গৃহবধূ জানান। পরে বখাটেরা শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে কোনো এক সময়ে তাঁকে বেদম মারধর করে ভিডিও ধারণ করে। এভাবে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও তারা গৃহবধূকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে আবারো শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আজ রোববার তারা ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ফলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে।
জানা যায়, ওই গৃহবধূর সঙ্গে তাঁর স্বামীর দীর্ঘদিন বনিবনা ছিল না। তবে সম্প্রতি স্বামী তাঁর কাছে ফিরে আসেন। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। ঘটনার সময় ওই নারীর স্বামীকে ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ করেন গৃহবধূ।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের নজরে এলে তিনি এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আজ নির্যাতিতাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে সন্ধ্যায় উদ্ধার করেছে। তিনি পুলিশকে জানান, আজ থেকে ২০/২৫ দিন আগে এ ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। তবে, সঠিক তারিখ তিনি বলতে পারেননি।’
তবে ভিডিওতে দৃশ্যমান বখাটেদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাঁচটি ইউনিট অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরী বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’