নৌকার প্রার্থী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে যুবকের হাত-পায়ের রগ কাটার অভিযোগ
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রবিউল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবকের হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিদুল ইসলাম ও তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিহার ইউনিয়নের একটি মাঠ থেকে গতকাল রোববার বিকেলে রবিউলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর মহিদুলকে আটকের চেষ্টা করা হলেও তিনি পালিয়ে যান বলে দাবি করছে পুলিশ।
স্থানীয়রা বলছেন, আহত রবিউল ইসলামও আওয়ামী লীগের কর্মী। তবে রবিউলের ভাই শিমুলকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি হলেন শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম। তাই, রবিউল ও তাঁর পরিবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা মতিউর রহমানের পক্ষে কাজ করছিলেন।
রবিউলের ভাই বিহার ইউপির সদস্য আবু রায়হানের দাবি, এবারের ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই মহিদুল ও তাঁর লোকজন গ্রামে গ্রামে তাণ্ডব শুরু করে। গত ১৭ অক্টোবর রাতে তারা বিহার হাটে বিদ্রোহী প্রার্থীর মোটরসাইকেল প্রতীকের অফিসে হামলা চালিয়ে দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে এবং দুটি দোকান ভাঙচুর করে। ওই ঘটনায় দুটি মামলা করা হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি, এমনকি আসামিরা জামিনেও ছিল না। রোববার সকাল থেকে তারা বিহার বাজারে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মারধর শুরু করে। পরে সম্মিলিতভাবে তাদের বাধা দেওয়া হলে তারা বাজার ছেড়ে বিভিন্ন পাড়ায় ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে। এক পর্যায়ে বাড়িতে হামলা চালিয়ে রবিউলকে তুলে নিয়ে দুই হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে স্থানীয় একটি মাঠে ফেলে দেয় তারা। একই সময় মোন্নাপাড়া গ্রামের ছয়টিসহ আশপাশের অন্তত ২০টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
ইউপি সদস্য রায়হান আরও দাবি করেন, গত ৩১ ডিসেম্বর তাঁর ভাই শিমুলকে প্রকাশ্যে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নির্যাতনের পর মুমূর্ষু অবস্থায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ফেলে দেয় মহিদুল ও তাঁর সহযোগীরা। সেখানেই মৃত্যু হয় শিমুলের। ওই ঘটনায় করা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মহিদুল। এবারের নির্বাচনে তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন রায়হান।
এদিকে, যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় চেয়ারম্যানপ্রার্থী মহিদুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই মইদুলকে আটকের জন্য শিবগঞ্জ হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু ওই সময় মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যান তিনি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’