পদক্ষেপ নিলে করোনার ব্যাপকতা ঠেকানো যাবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা
করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাওয়ার আগে এখনো তা ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর জন্য একটাই পরামর্শ, মানুষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা, আর কার্যকর কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
বলা হচ্ছে, করোনা বিস্তারে ছয়টি স্তর থাকে। বাংলাদেশ এখনো বিস্তারের শুরুর দিকের স্তরে রয়েছে। এ অবস্থায় একজন করোনা রোগী হয়তো আরো কয়েকজন মানুষের শরীরে করোনা ছড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি যদি শেষের স্তরের দিকে চলে যায়, তখন একজন মানুষই কয়েক হাজার মানুষের মধ্যে করোনা ছড়িয়ে দিতে পারে। শনিবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিদেশ থেকে আসেনি বা বিদেশফেরতদের সংস্পর্শে আসেনি এমন মানুষের মধ্যে করোনা ছড়ায়নি। তবে এভাবে নিজেদের মধ্যে করোনা ছড়ানো এখন সময়ের ব্যাপার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘প্রথম যে করোনা রোগী, বিজ্ঞান বলছে, তিনি আড়াই থেকে ২ দশমিক ৬ জন লোকের মধ্যে এটা ছড়াবেন, কেউ বলে এই সংখ্যাটা ৩। তারপর সে আবার ছড়াবে। এভাবে ছয় ধাপের পর এটা হয়ে যাবে সাড়ে তিন হাজার, একজনের জন্য। চীনের উহানে তাই ঘটেছিল।’
এ অবস্থায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, যেহেতু করোনার পরীক্ষা করে আক্রান্তদের আলাদা করার সুযোগ পর্যাপ্ত নেই, তাই অনেকেই নানা উপসর্গ নিয়ে এদিক সেদিক ছোটাছুটি করে আরো বেশি করোনা ছড়িয়ে দিতে পারেন।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম এ আজহার বলেন, ‘আমরা যদি বলি, চেম্বার বন্ধ রাখব, তাহলে রোগীরা যাবে কোথায়? যাদের অন্যান্য অসুখ রয়েছে, তারা যাবে কোথায়? আমাদের জীবনের বা আমার পরিবারের নিরাপত্তা কোথায়? সুতরাং, আমি বলব, একটা ওয়ান স্টপ সেন্টারের মতো ওই হাসপাতালেই সরাসরি আমরা ওভার টেলিফোনেও বলতে পারি যে, আপনি ওইখানে যান, ওখানে ডাক্তার আছেন। তারা পারসোনাল প্রোটেকশন নিয়ে আছেন। তারা আপনাকে দেখবে, ব্লাড স্যাম্পল টেস্ট করবে। টেস্টের পর নেগেটিভ হলে আপনাকে ছেড়ে দেবে, আর পজিটিভ হলে ভর্তি করে চিকিৎসা দেবে।’
বলা হচ্ছে, এখনো কিছু সময় আছে, যেখানে সঠিক ব্যবস্থা নিলে করোনার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়াকে ঠেকানো সম্ভব হবে।
ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ‘কন্টাক্ট যত কমানো যাবে, এই কন্টাক্ট কমানোর মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকিটা কমে যাবে। যেটা শুরু হয়েছে, যেমন—সেলফ কোয়ারেন্টিন, লকডাউন, কারফিউ, এমন নানান ব্যবস্থা। আরেকটি হলো, স্ক্রিনিংয়ের আওতা বাড়ানো। এটার মাধ্যমে আপনি অনেক বেশি সংখ্যক, যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে, সেটা জানবেন, এবং আপনার জানার বাইরে থাকবে না।’