পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ১২০তম জন্মবার্ষিকী আজ
‘একটি বছর হইয়াছে সেই রূপাই গিয়াছে চলি,/ দিনে দিনে নব আশা লয়ে সাজুরে গিয়াছে ছলি |/ কাইজায় যারা গিয়াছিল গাঁয়, তারা ফিরিয়াছে বাড়ী,/ শহরের জজ, মামলা হইতে সবারে দিয়াছে ছাড়ি’, ‘এইখানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে’। পঙক্তিগুলো উঠে এসেছে বাংলাদেশের পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কলমে। তিনি আহ্বান জানিয়েছে গ্রামে ফিরে যেতে। বলেছেন—‘তুমি যাবে ভাই, যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়।’ তিনি ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। সে হিসেবে আজ তাঁর ১২০তম জন্মদিন।
ফরিদপুরের কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা গ্রামে বাবা আনছারউদ্দিন ও মা আমেনা খাতুনের কোলজুড়ে জন্ম নেন এই কবি। সাহিত্যের সব শাখায় তাঁর বিচরণ ছিল। তিনি কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন অসংখ্য গান। ‘আমার হার কালা করলাম রে’, ‘আমায় ভাসাইলি রে’, ‘বন্ধু কাজল ভ্রমরা রে’, ‘আমায় এতো রাতে’, ‘নদীর কূল নাই কিনার নাই’, ‘ও বন্ধু রঙিলা’, ‘প্রাণো শখি রে ওই শোন কদম্ব তলে বংশী বাজায় কে’—মানুষের মুখে মুখে সুরে সুরে ঘুরে বেড়ায়।
পল্লিকবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুরের সরকারি ও বেসরকারি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
কবির লেখায় রয়েছে অসংখ্য গল্প, উপন্যাস, নাটক ও আত্মকথাসহ নানাধর্মী সাহিত্য রচনায় কবি সুনাম কুড়িয়েছেন। তাঁর লেখা নাটকের মধ্যে আছে—পদ্মাপার (১৯৫০), বেদের মেয়ে (১৯৫১), মধুমালা (১৯৫১), পল্লীবধূ (১৯৫৬)।
পল্লিকবি জসিমউদ্দীন ১৯৬৮ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট উপাধি, ১৯৭৬ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার, একই বছর বাংলাদেশের ২১শে পদক, ১৯৭৮ সালে স্বাধীনতা পদক সহ আরও অনেক সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হন।