পাবনায় আওয়ামী লীগের ২ কর্মীকে হত্যা, আটক তিন

Looks like you've blocked notifications!
পাবনায় হত্যার শিকার আওয়ামী লীগকর্মী হুকুম খা ও মজনু মিয়া। ছবি : সংগৃহীত

পাবনায় আওয়ামী লীগের দুই কর্মীকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। শহরের দিলালপুরে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদঘাটন না হতেই তার একদিন পর এই দুই হত্যাকাণ্ডে মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ শনিবার ভোররাতে পাবনার সদর উপজেলায় ভাঁড়ারায় ৯০ বছরের বৃদ্ধ আওয়ামী লীগকর্মী হুকুম খাকে নিজ বাড়িতে গুলি করে এবং আতাইকুলায় মজনু মিয়া (৪০) নামের এক আওয়ামী লীগকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুটি ঘটনাই এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। তবে পদ্মবিলার মজনু হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

অপরদিকে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদের সঙ্গে অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান আহমদের বিরোধ চলে আসছে। এর আগে ২০১৮ সালে ৩ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে সুলতানের বাবা লস্কর খা ও চাচা আবদুল মালেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরই জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলেও ধারণা করছে পুলিশ।

তবে নিহত হুকুম আলী একদিন আগে বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় একটি মামলা করেন। সেখানে জাসদ থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী সুলতানকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম দিয়ে একটি মামলা করেন। মামলা দায়েরের পরের দিনই এই ঘটনার শিকার হয়েছেন বলেও জানান পাবনা সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাফিজুর রহমান। তবে এখনো বিস্তারিত কিছুই বলতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলার ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান বলেন, ‘এসব ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। সুলতানরা শুধু শুধু আমাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করেন। বিগত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে তারা আমাকে রাজনৈতিকভাবে নানা ধরনের হয়রানি করার চেষ্টা করছে।’

আবু সাঈদ খান আরো বলেন, ‘সুলতান নিজের পিঠ বাঁচাতে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করছে।’

এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত সুলতান ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘আমি সাঈদ বাহিনীর ষড়যন্ত্রের শিকার। কেন আমি ৯০ বছরের এক বৃদ্ধকে মারব? আমাকে ফাঁসাতে সাঈদরা এই ঘটনা সাজিয়েছে।’

এদিকে করোনাকালে ট্রিপল মার্ডারের রেশ কাটতে না 

কাটতেই একের পর এক হত্যার ঘটনায় পাবনায় চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে লোকজন।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘দুটি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে পেরেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’ 

পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন নিহত হুকুম খা ও মজনু মিয়াকে দলীয় কর্মী দাবি করে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন।