পাবনায় আ.লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ, আহত ১০

Looks like you've blocked notifications!
পাবনার সুজানগরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি করাকে কেন্দ্র করে আজ রোববার সংঘর্ষ ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছবি : এনটিভি

পাবনার সুজানগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ১০ জন আহত হয় এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুরে সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পাবনার আমিনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ এক বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনোয়ার হোসেন বাবু এবং আব্দুর রশিদের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।

এ সময় বাবুর সমর্থকদের হাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাব লাঞ্ছিত হন। আনোয়ার হোসেন বাবু উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহিন চেয়ারম্যানের সমর্থক এবং আব্দুর রশিদ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ওহাবের সমর্থক।

এরই জের ধরে আজ দুপুর দেড়টার দিকে বাবুর সমর্থকরা রশিদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে রশিদসহ তাঁর পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ সময় হামলাকারীরা রশিদের সমর্থকদের ১০ থেকে ১২টি বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত মজিদের স্ত্রী আফরোজা খাতুনের।

দেলোয়ারের স্ত্রী শাহানাজ খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামী রশিদ গ্রুপের সমর্থক হওয়ায় আমাদের তাঁতঘরে হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০টি তাঁতের সুতার রিম কেটে নষ্ট করেছে সন্ত্রাসীরা। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আওয়ামী লীগ করি বলে ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের এমন ক্ষতি করে দিল।’

এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বাবু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি বা আমার লোকজন হামলা করে নাই। উল্টো রশিদ গ্রুপের লোকজন হামলা চালিয়ে আমার চারজন লোককে মারপিট করেছে।’

তবে এই ঘটনায় আব্দুর রশিদের বাড়ি গিয়ে ভাঙচুর অবস্থা দেখা যায় এবং উপস্থিত লোকজন বলেন রশিদ আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আছেন। তবে কোন হাসপাতালে আছেন তা কেউই বলতে পারেননি।  

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহিন বলেন, ‘আমি ওই সভায় উপস্থিত ছিলাম না। তবে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে যেটুকু শুনেছি তাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্বশীল আচরণ করেননি। এই ঘটনার সঙ্গে আমার লোকজনের সম্পৃক্ততা নেই।’

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনের লোকজন উত্তেজিত হয়ে মঞ্চে চেয়ার ছুড়ে মারেন। তারই জের ধরে আজ দলের ত্যাগী লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর ও হামলা চালিয়েছেন। চেয়ারম্যান শাহিন এগুলো করাচ্ছেন। আমার লোকজনকে মারপিট করে পুলিশ দিয়েও হয়রানি করাচ্ছেন। সব সময় এমপি তাদের সঙ্গে আছেন বলে যা-তা আচরণ করেন, যা কখনোই কাম্য নয়। পরে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং কমিটি গঠন স্থগিত হয়ে যায়।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনো থানায় মামলা হয়নি। মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’