পাবনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা, ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রফিকুল ইসলাম। গত শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে রফিকুল গা ঢাকা দিয়েছেন।
অপরদিকে, অভিযুক্ত প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছে ভিকটিমের পরিবার।
ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, ঘটনার দিন সকালে তাদের বাড়িতে কেউ ছিল না। এ সময় ওই ছাত্রী ঘরের মধ্যে একা টিভি দেখছিল। সেই সময় ওই ছাত্রীর বাড়িতে দোকানের হালখাতার কার্ড নিয়ে হাজির হন অভিযুক্ত রফিকুল। ছাত্রীকে ঘরে একা পেয়ে রফিকুল তাকে ধষর্ণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী কান্নাকাটি শুরু করলে রফিকুল হাতে ২০ টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউকে বলতে নিষেধ করে পালিয়ে যান। পরে ভিকটিমের মা বাড়িতে এলে সে ঘটনাটি তার মাকে সব খুলে বলে। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে ওইদিন রাতে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক করা হয়। বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ প্রনোর নেতৃত্বে ইউপি সদস্য আনোয়ার সরদার, গ্রামপ্রধান আবু বক্কার খাঁ ও আবুল প্রামাণিক উপস্থিত থেকে রফিকুলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় ছাত্রীর পরিবার বিচার না মানলে চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সবাই বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। কিন্তু ভিকটিমের পরিবার সুষ্ঠু বিচার চান, টাকা চান না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে চলে আসতে চাইলে চেয়ারম্যান তাদের কাছে থেকে সাদা কাগজে জোর করে স্বাক্ষর রেখে দেন।
রফিকুল স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় ভিকটিমের পরিবার থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন বলেও জানান ভিকটিমের মা।
ছাত্রীর বাবা সুবিচার না পেয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ বলে কি সমাজে বিচার পাব না? আমাদের ইজ্জতের কি দাম নাই? আমরা টাকা চাই না। বিচার চাই।’
ঘটনার বিষয়ে দিলাপাশার ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ প্রনো বলেন, ‘অভিযুক্ত রফিকুল ভিকটিমকে শ্লীলতাহানি করেছে মর্মে স্বীকার করেছে।’
তবে জরিমানা করার বিষয়টি অস্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘শনিবার রাতে উভয় পরিবারকে নিয়ে পরিষদে সালিশ বৈঠকে বসা হয়েছিল। কিন্তু বৈঠকে ছাত্রীর পরিবারের টাকার দাবি না থাকায় আপস মীমাংসা হয়নি। কিন্তু ফরমালিটি মেইন্টেইনের জন্য তাদের কাজ থেকে স্বাক্ষর রাখা হয়েছে।’