পাবনা উত্তপ্ত, দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ

Looks like you've blocked notifications!
পাবনা শহরে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি : এনটিভি

পাবনা পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া মহল্লার গোডাউনপাড়ায় আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনির সমর্থক আর একজন বিদ্রোহী মেয়র পদপ্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধানের সমর্থক বলে জানা গেছে।

নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে আজ সন্ধ্যায় পাবনার স্বাধীনতা চত্বরে সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি। এ সময় নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করায় পাবনা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। একই কারণে পাবনা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আরমান হোসেনকে বহিষ্কার করে সদর উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

পাবনা শহরে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহতদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি : এনটিভি

এদিকে পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী শরীফ উদ্দিন প্রধানের নারিকেল গাছ প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনে সরাসরি অংশগ্রহণ করায় দলের ১৮ গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ পাঠিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। আজ বিকেলে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নোটিশপ্রাপ্তদের আগামী ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করায় এবং নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করায় পাবনা সদর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটির সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নির্বাচনী জনসভা শেষে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া মহল্লার গোডাউনপাড়ায় নৌকার প্রার্থী ও নারিকেল গাছ মার্কার মেয়র প্রার্থীর সমর্থক দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এঁরা হলেন শালগাড়িয়া মহল্লার বকুল শেখ, নাজমুল বিশ্বাস, ইজাজুর বিশ্বাস, লতিফ হোসেন ও কেটু হোসেন।

এই সংঘর্ষের ঘটনার পরে পুরো শহর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। উভয়পক্ষ শহরের গুরুত্বপূর্ণ আব্দুল হামিদ সড়কের দুই প্রান্তে অবস্থান নিয়েছে। নৌকা প্রতীকের পক্ষের সমর্থকেরা পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নেয় আর নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা গোপালপুর বাণী হল চত্বরে অবস্থান নিয়েছে। উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য উভয়পক্ষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। পুরো শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় আবারো সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। তবে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে কোনো কথা বলেনি রাজি হয়নি প্রশাসন।