পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিল পাশ, আনন্দে ভাসছে নওগাঁবাসী

জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ’ বিলটি সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমে এই বিল পাশের খবর ছড়িয়ে পড়লে খুশির উৎসবে মেতে উঠে জেলাবাসী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ হওয়ার খবরে খুশির স্ট্যাটাস ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
এমন বড় একটি উপহার নওগাঁবাসীকে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল হয়েছে বেশ কয়েকটি উপজেলায়। জেলার নিয়ামতপুর, সাপাহার, মহাদেবপুর, বদলগাছী ও পোরশা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এসব মিছিল বের হয়।
পাবলিক এই বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নওগাঁর ৩০ লাখ মানুষের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নওগাঁ-১ আসনের সংসদ সদস্য খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নওগাঁ কিংবা উত্তারাঞ্চল নয়, পুরো দেশের জন্যই শিক্ষার নতুন দ্বার উন্মোচন করল। সরকারি সফরে জাপানে থাকায় মোবাইফোনে গণমাধ্যমকে এ অভিব্যক্তি জানান খাদ্যমন্ত্রী।
নওগাঁ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দিন তরফদার বলেন, এটি নওগাঁবাসীর জন্য আশীর্বাদ। এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল জলিল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারসহ স্থানীয় সব সংসদ সদস্যকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
নওগাঁ সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন জলিল জন বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল দেশ। আমার বাবা প্রয়াত আব্দুল জলিলেরও স্বপ্ন ছিল এমন একটি বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠার। দীর্ঘদিন পরে হলেও এমন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বিল চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
আজ সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, নওগাঁ বিল–২০২৩’ পাসের জন্য তোলেন। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩-এর বিধানাবলি পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্যকোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যেকোনো সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনে আচার্যের অনুমোদন নিয়ে ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব সহযোগিতা প্রদান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব, আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা দেবে।