পিস্তল দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকি, কাঁদলেন খাদ্য কর্মকর্তা
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাউমাউ করে কাঁদলেন খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম। তাঁকে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খাজা নেওয়াজের এক সমর্থক পিস্তল দেখিয়ে জানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার রামদিয়া খাদ্যগুদামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত ওই খাদ্য গুদামের প্রহরী মশিউর রহমানকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ওই গুদামের খাদ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের গুদামে কৃষকের কাছ থেকে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে ধান চালের দাম বেশি থাকায় কৃষক খাদ্যগুদামে ধান চাল দিচ্ছে না। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুক্তভাবে ধান চাল কেনার নির্দেশ দেন। আমি এ পর্যন্ত কৃষি কার্ডের মাধ্যমে ৪শ টন ধান কিনেছি। আমাদের প্রহরী মশিউর রহমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খাজা নেওয়াজ ও তাঁর লোকজনকে খাদ্যগুদামে ধান দিতে উৎসাহিত করে। এ নিয়ে গত রোববার খাজা নেওয়াজের লোকজন ও তাঁদের পেছনে দাঁড়িয়ে প্রহরী আমাকে লাঞ্ছিত করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রহরীকে সতর্ক করে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এতে প্রহরী ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানকে দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।’
খাদ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে খাদ্যগুদামে আসেন। প্রহরীর মাধ্যমে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে অফিসে ঢোকেন। তিনি অফিসে বসে তাঁর কাছ থেকে ধান নেওয়ার কথা বলেন। আমি কৃষিকার্ডের মাধ্যমে ধান দেওয়ার কথা বলি। পরে তাঁর সঙ্গে আসা একজন পিস্তল বের করে বলেন, ‘এটা দিয়ে তোকে ফেলে দেব। আগে অনেক ফেলেছি। তোকে ফেলে দিলে কিছুই হবে না।’
ওই খাদ্য কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছি। তিনি আমাকে আইনি সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন।’
অভিযুক্ত কাশিয়ানী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান খাজা নেওয়াজ বলেন, ‘আমি বা আমার লোকজন রাতে খাদ্য গুদামে যাইনি। আমাদের বিরুদ্ধে খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। গুদামের প্রহরীর সঙ্গে কর্মকর্তার দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কোনো ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। রাতে গুদামে কী ঘটনা ঘটেছে তা আমি জানি না।’
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে ওই কর্মকর্তা আইনি সহায়তা চাইলে তা করা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত ওই খাদ্য গুদামের প্রহরী মশিউর রহমানকে বদলি করার জন্য আমি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ শেফাউর রহমানকে ফোন দেই। তিনি মশিউরকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করেন।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শেফাউর রহমানের মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।