‘পীর’ আবুল বাশারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ভৈরবে সমাবেশ
পবিত্র হজ নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের উমানাথপুর গুলে মদিনা দরবার শরিফের পীর আবুল বাশার আলকাদরীকে গ্রেপ্তার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ভৈরবের আলেম-ওলামাসহ সর্বস্তরের বিক্ষুব্ধ জনতা। লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার দুপুরে শহরের সিলেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার ব্যানারে ভৈরব বাজার জামে মসজিদের খতিব হাফেজ জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন কমলপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল আহাদ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুফতি মুহসিনুল হাসান, ইমাম-উলামা পরিষদ ভৈরবের সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ আল আমিন, সহসভাপতি মাওলানা মুক্তার হুসাইন রাইপুরী, সেক্রেটারি মাওলানা এনায়েতুল্লাহ ভৈরবী, মাওলালা আব্দুস সালাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সাহেল, মুফতি উবাইদুল্লাহ আনোয়ার, মুফতি যোবাইর আহমাদ, মাওলানা আইউব সাবেরী, মাওলানা উসমান গণী প্রমুখ।
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে অবিলম্বে আবুল বাশারের গ্রেপ্তারসহ শাস্তি দাবি করেন। অন্যথায় আলেম ওলামাদের নেতৃত্বে ধর্মপ্রাণ মুসলিম তৌহিদী জনতা তথাকথিত গুলে মদীনা দরবার অভিমুখে লংমার্চ করে সেই ভন্ডপীরের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেবে। তখন যেকোনো পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসন দায়ী থাকবে বলে তারা হুঁশিয়ারি করেন।
তারা প্রশাসনের উদ্দেশে আরো বলেন, কোন আইনে, কিভাবে এই ভণ্ডপীর আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করবেন, সেটি আপনাদের বিষয়। আমরা শুধু জানি, ইসলামের এই শত্রুকে গ্রেপ্তার করে শাস্তির মুখোমুখী না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। তবে আপনারা আমাদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাবেন না। এর ফলাফল ভালো নাও হতে পারে। আপনারা ভাববেন না, আমরা কিছুদিন আন্দোলন করে চুপ করে যাব। আমাদের এই আন্দোলন থেমে যাওয়ার নয়। কারণ এটি আমাদের ঈমানি দায়িত্ব পালনের আন্দোলন।
উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের উমানাথপুর গ্রামের গুল-এ মদিনা দরবার শরিফের কথিত পীর আবুল বাশার আলকাদরী গত ১৪ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের একটি ওয়াজ মাহফিলে পবিত্র হজসহ ইসলামী অনুশাসনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনগড়া, মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করে এমন সব বিষয় উল্লেখ করে বক্তব্য দেন এবং সেই বক্তব্য সহীহ সুন্নাহ নামের একটি ইউটিউব অ্যাকাউন্ট থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হয়।
আবুল বাশারের বক্তব্যে দেশব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমিনুল ইসলাম মামুন নামের একজন আইনজীবী সংক্ষুব্ধ হয়ে ২ জানুয়ারি ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ প্রশাসন সেটি আমলে নেয়নি। পরে ১২ জানুয়ারি রোববার আবুল বাশারকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশাল সমাবেশ, প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করে কয়েক হাজার আলেম ওলামাসহ ধর্মপ্রাণ স্থানীয় জনতা।
পরে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন রাতেই আইনজীবী মামুনের মামলাটি পুলিশ গ্রহণ করলেও তাঁকে গ্রেপ্তার করেনি। এরই মধ্যে আবুল বাশার উচ্চ আদালত থেকে ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। ২৩ জানুয়ারি আলেম উলামা পরিষদের পক্ষ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে আজকের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।