পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগে শুধু একটি মুখচ্ছবি নয়, প্রিয়জনকে হারাই : আইজিপি

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে পুলিশ স্টাফ কলেজ কম্পাউন্ডে আজ রোববার পুলিশ মেমোরিয়ালের উদ্বোধন শেষে বক্তব্য দেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য যখন আত্মহুতি দেন তখন শুধুমাত্র একটা মুখচ্ছবি হারাই না। আমরা আমাদের একজন কমরেডকে হারাই, প্রিয়জন, সাথী, সহকর্মী, বন্ধুকে হারাই।’

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মিরপুর-১৪ পুলিশ স্টাফ কলেজ কম্পাউন্ডে পুলিশে কর্মরত অবস্থায় নিহতদের সম্মানে তৈরি পুলিশ মেমোরিয়ালের উদ্বোধন শেষে আইজিপি এ কথা বলেন।

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘একইসঙ্গে একটি পরিবার প্রিয় মানুষটিকে হারায়। স্বামী তার স্ত্রীকে কিংবা স্ত্রী তার স্বামীকে হারান। সন্তান বাবা কিংবা মাকে, বাবা-মা তার ভালবাসার ধন সন্তানকে হারায়। এটি একটি বিশাল ক্যানভাস থেকে আমরা হারিয়ে ফেলি।’

ড. বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ‘পুলিশে চাকরির কারণে যেসব পরিবার ভালবাসার মানুষটিকে হারিয়েছেন আমাদের সান্তনার ভাষা নেই। আমরা সেসব পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। সমস্ত ভালবাসা দরদ দিয়ে সেসব সদস্যদের স্মরণ করছি। আজ একটি তাৎপর্যময় গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজকে আমরা পুলিশ সার্ভিসের জন্য, বাহিনীর জন্য পুলিশ মেমোরিয়াল উদ্বোধন করলাম। বিভিন্ন দেশেই এমন মেমোরিয়াল হল রয়েছে।’

আইজিপি বলেন, ‘যখন যুদ্ধাবস্থা হয় দেশে তখন দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ডিফেন্স ফোর্সেস অংশ নেয়। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সময়ে যারা দুষ্কৃতিকারী, দেশে জনগণ, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংসের জন্য লিপ্ত হয় তাদের বিরুদ্ধেই পুলিশ ক্রমাগত যুদ্ধে লিপ্ত থাকে। যেখানেই যুদ্ধ সেখানেই প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে, প্রাণহানি ঘটে। বিশ্বব্যাপী পুলিশ লাইন ডিউটিতে প্রাণ হারায়। আমরাও প্রতিবছর শত শত সহকর্মীকে হারাই কর্তব্যরত অবস্থায়।’

করোনার দুই বছরে ১০৬ জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘হাজার হাজার সদস্য আক্রান্ত ও অসুস্থ হয়েছেন। সুস্থ হয়ে আবার কর্মে ফিরেছেন। পুলিশ ১৯৭১ সালেও বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে প্রথম বুলেট নিক্ষেপ করেছে। শাহাদাতবরণ করেছেন অনেকেই। এই যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে ওঠা পুলিশ বাহিনী প্রথম শাহাদাতবরণকারী বাহিনী। মানুষের জন্য, নিরাপত্তা শান্তি ও শৃঙ্খলার জন্য এখনো আত্মউৎসর্গ করে চলেছে।’

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা পুলিশ মেমোরিয়াল ডে পালন করছি। মেমোরিয়াল-ডে তে ঐ বছরে মৃতব্যক্তিদের পরিবারের উপস্থিতিতে সম্মান প্রদর্শন করা হয়। মেমেরিয়াল-ডে পালন করার জন্য এর আগে রেপ্লিকা স্মৃতি তৈরি করে পালন করা হয়েছে। আমাদের এখানে যে মেমোরিয়াল হল ও টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে বিভিন্ন সময়ে কর্তব্যরত অবস্থায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আত্মত্যাগ করা সদস্যদের নাম থাকবে। তাদের জীবনবৃত্তান্তের আর্কাইভ রয়েছে। ৭১ স্মরণে ৭১ ফুট টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। পুলিশ মেমোরিয়াল দর্শনার্থীদের জন্য মুক্ত করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’