প্রকল্পের তদারকিতে ফাস্ট ট্র্যাক মনিটরিং চান প্রধানমন্ত্রী

বিদ্যমান ১০টি দ্রুতগতির প্রকল্পের পাশাপাশি পর্যবেক্ষণ কমিটির অধীনে আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নজরদারির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
‘আমরা বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি। এর মধ্যে কয়েকটি দ্রুতগতির প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত। আমরা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ শুরু করবো,’ ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প মনিটরিং কমিটির পঞ্চম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
আজ রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয় বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকভাবে কিছু প্রজেক্ট দ্রুতগতির প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটি প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই কমিটি শুধুমাত্র এই প্রকল্পগুলোর তদারকি করলেই হবে না বরং তারা ভবিষ্যতে আরো অনেক প্রকল্প আছে সেগুলোও পর্যবেক্ষণ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ তাদের সরকারকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মান বজায় রেখে বাস্তবায়ন করতে পারছে।
আওয়ামী লীগকে টানা ক্ষমতায় আনায় শেখ হাসিনা জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছি। সুতরাং, আমরা আমাদের উন্নয়ন কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব এবং এগুলোর মান বজায় রাখতে পারব।’
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে উন্নয়নমূলক কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করা হয়। প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুর প্রায় ৩ দশমিক ৫ কিলোমিটার কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প এবং অন্যান্য দ্রুতগতির প্রকল্পের বাস্তবায়নে অগ্রগতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।
ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্পগুলো তথ্যানুসারে এখন পর্যন্ত মূল পদ্মা সেতুর প্রায় ৮৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে, আর সামগ্রিক অগ্রগতি হয়েছে ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
দশটি দ্রুতগতির প্রকল্পগুলো হলো- পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প, রামপালে মৈত্রী সুপার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ঢাকা গণপরিবহন উন্নয়ন প্রকল্প (১, ৫, ৬ লাইনের আওতায়) এলএনজি টার্মিনাল এবং গ্যাস পাইপ লাইন প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প, পদ্মা সেতু রেলপথ সংযোগ প্রকল্প এবং দোহাজারী-কক্সবাজার-গুনদুম রেলপথ লাইন প্রকল্প।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জনগণের দোরগোড়ায় সুবিধাগুলো পৌঁছে দেওয়ার এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পগুলো গ্রহণ করেছে।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান ও তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের পরিচালনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং অন্যান্য সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।