প্রতারণার অভিযোগে নিউ বাঘাবাড়িকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঘি সংগ্রহ করে তা প্যাকেজিং করে সরবরাহ করত ‘নিউ বাঘাবাড়ি’। সংগ্রহ করা এসব ঘি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নিজেদের নামে চালায়, আইনত যা পারে না প্রতিষ্ঠানটি। কারণ, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স ঘি প্যাকেজিং ও সরবরাহের। এমন অভিযোগ এনে নিউ বাঘাবাড়ির মালিককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ শনিবার দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির মালিবাগ কার্যালয়ে অভিযান শেষে নিরাপদ খাদ্য আইন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ওই জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। পলাশ কুমার বসু এনটিভি অনলাইনকে এই তথ্য জানিয়েছেন। অভিযানটির সহযোগিতায় ছিল র্যাব-৩।
পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘সমির ঘোষ নিউ বাঘাবাড়ির মালিক। তাঁর ট্রেড লাইসেন্স হলো ঘি প্যাকেজিং ও সরবরাহের। মানে তাঁর কাজ হচ্ছে মূলত বাজারজাত করা। কিন্তু তিনি সিরাজগঞ্জসহ সারাদেশ থেকে ঘি সংগ্রহ করতেন। সেই সংগৃহীত ঘি তিনি নিজের প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ঘি বলে চালাতেন, যেটা তিনি পারেন না।’
র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘অন্যস্থান থেকে ঘি সংগ্রহ করে প্যাকেজিং করার সময় তিনি যেসব পুষ্টিগুণ লিখতেন, ল্যাব টেস্ট ছাড়াই লিখতেন। যেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুষ্টিগুণ তিনি লিখতে পারেন তবে তা ল্যাব টেস্টের পর। পরীক্ষা ছাড়া পুষ্টিগুণ তিনি লিখেন কীভাবে? এ ছাড়া সংগৃহীত ওইসব ঘি কোথা থেকে তিনি কিনেছেন তারও কোনো রশিদ সংগ্রহ করেননি। কারণ, তিনি সব ঘি নিজের নামে চালাতেন।’
পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘সমির ঘোষের ব্যান্ড নাম সমির ঘোষ। অথচ তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানের ব্যান্ড নাম লিখতেন, স্পেশাল গাওয়া ঘি। এই বিশেষণ লেখার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া আমরা প্রতিষ্ঠানটিতে কিছু কাগজ পেয়েছি যেখানে সিডনির অস্ট্রেলিয়াতে ঘি পাঠানোর তথ্য আছে। ল্যাব টেস্ট না করে এসব ঘি তিনি দেশের বাইরে পাঠাতেন। অথচ তাঁর এক্সপোর্ট লাইসেন্স নেই। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে যদি ঘি রপ্তানি করেন তাহলে ল্যাব টেস্ট সার্টিফায়েড হতে হবে, কাস্টমসের ছাড়পত্র লাগবে। অননুমোদিত ঘি রপ্তানি করলে দেশের বদনাম হবে। যদিও তিনি সেটা করে আসছিলেন। ওই ঘিতে আবার তিনি পতাকার ছবিও ব্যবহার করতেন। যেটার কোনো সুযোগ নেই।’
পলাশ কুমার বসু আরো বলেন, ‘সংগৃহীত ঘি অননুমোদিতভাবে নিজের ব্র্যান্ডের বলে বিক্রি, চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার, অবৈধভাবে বিদেশে রপ্তানি, জাতীয় পতাকার সিল ব্যবহার করাসহ নানা অভিযোগ সমির ঘোষের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের কোনোটারই সদুত্তর দিতে পারেননি সমির ঘোষ। যে কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও নিরাপদ খাদ্য আইনের বিভিন্ন ধারায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। তিনি নগদে ১০ লাখ টাকা জরিমানা পরিশোধ করেছেন।’