প্রতারিত হয়ে গড়ে তুললেন প্রতারকচক্র, গ্রেপ্তার ৬

Looks like you've blocked notifications!
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার প্রতারকচক্রের ছয় সদস্য। ছবি : সংগৃহীত

শুরুতে মাছুম বিল্লাহ (৩৩) ও খাইরুল আলম রকি (২০) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নামসর্বস্ব নিয়োগ প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে প্রতারণার শিকার হন। এরপর সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগান তাঁরা। গড়ে তোলেন প্রতারণার চক্র। নিজেরা ঠিক যেভাবে প্রতারিত হয়েছিলেন, সেভাবেই লোক ঠকাতে থাকেন তাঁরা। অবশেষে র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েন এই চক্রের ছয় সদস্য।

র‍্যাব-৩ জানায়, মাছুম ও রকি ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে ৭০০ থেকে ৮০০ জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান র‍্যাব-৩-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

র‍্যাবের দাবি, প্রতারিত হওয়া ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে ওই চক্রের ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন—মাছুম বিল্লাহ (৩৩), খাইরুল আলম রকি (২০), কামরুজ্জামান ডেনিশ (২২), মাহমুদুল হাসান (৩২), মাসুদ রানা (২৪) ও এসএম রায়হান (২৪)।

অভিযানে ৮টি মুঠোফোন, ৮টি সিমকার্ড নগদ পাঁচ হাজার ৫৪০ টাকা, একটি মনিটর, একটি কি-বোর্ড, একটি মাউস, একটি সিপিইউ, ক্যাবল ৪টি, একটি ল্যাপটপ, দুটি রাউটার, স্ট্যাম্প প্যাড, শতাধিক চাকরি ভর্তি ফরম, সিভি দুই শতাধিকসহ আরও কিছু দ্রব্যাদি জব্দ করে র‍্যাব।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তারা সুপরিকল্পিতভাবে ধাপে ধাপে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন। মাছুম বিল্লাহ উক্ত প্রতারক চক্রের মূলহোতা। তিনি নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিতেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইন বিষয়ে পড়াশোনা করার কারণে মাছুম বিল্লাহ সুকৌশলে তাঁর প্রতারণাকে বৈধভাবে উপস্থাপন করার জন্য ভুয়া লাইসেন্স তার অফিসে ঝুলিয়ে রাখতেন এবং তার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত এবং গভ. রেজিঃ নং সি-১৫৭৭৬৩ উল্লেখ করতেন। এসব দেখে চাকরিপ্রার্থীরা এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান মনে করতেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, এ ছাড়াও আকর্ষণীয় সুযোগ হিসেবে থাকা ফ্রি, খাওয়ার সু-ব্যবস্থা, কর্মদক্ষতার উপর পদোন্নতি, অভিজ্ঞতা না হলেও চলবে, কর্মঠ ও সুদর্শন হতে হবে, এসব লোভনীয় প্রস্তাব উল্লেখ করা থাকত। যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিজ্ঞপ্তি দেখে অসংখ্য বেকার যুবক যুবতী, স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চাকরিপ্রত্যাশীরা যোগদান করলে তাদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হত—প্রতি মাসে নতুন নতুন চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতে হবে। এবং নতুন চাকুরি প্রার্থী সংগ্রহের ভিত্তিতে কমিশন হিসেবে তাদের বেতন প্রদান করা হবে। কিন্তু, কাজে যোগদান করার পর তাদেরকে কোন বেতন দেওয়া হত না। ভুক্তভোগীরা কোম্পানির প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে তাঁরা বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকে এবং টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়।