প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার স্ট্যাটাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
গোপালগঞ্জে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার স্ট্যাটাস দিয়ে গ্রেপ্তারকৃত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ মীনা। ছবি : সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার স্ট্যাটাস দিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ মীনা।

ফয়সাল আহম্মেদ মীনা (২৫) গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া ইউনিয়নের নিজড়া জাঙ্গাল বাজার এলাকায়।

ফেসবুকে ওই শিক্ষার্থী নিজেকে জেএমবি, আনসার আল ইসলাম, হিজবুত তাওহীদ ও হরকাতুল জিহাদের একজন সদস্য দাবি করেছেন। তাঁর পরিবার বিএনপি-জামায়াত করে বলেও ফেসবুকে তিনি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার স্ট্যাটাস দেওয়ার ঘটনায় আজ বুধবার গোপালগঞ্জ থানায় ওই শিক্ষার্থীকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি মো. মাসুদ রানা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।

মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ফেসবুকে ওই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এতদিন দেখা করতে চেয়েছি। গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে গুলি করে মেরে ফেলব। শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে না পারলে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে পারব না। আমার কোনো ক্ষমতাও নাই। এজন্য বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম, যেকোনো একজনের কাছ থেকে বন্দুক কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনাকে গুলি করে মেরে ফেলব। কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও পারলাম না। যে দিন দেখা করার সুযোগ পাব, সেদিন মেরে ফেলব, ইনশাল্লাহ।’

মামলার বাদী মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার মামা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিটু গোপালগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষে ভোট চেয়ে আমি আমার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেই। সেখানে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আওয়ামী লীগ সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দেন। তার ফেসবুক আইডি ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে দেখি গত ১৬ জুন একটি স্ট্যাটাসে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুলি করে হত্যার ইচ্ছা পোষণ করেন। তার ফেসবুকের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট নিয়ে প্রিন্ট করি। এগুলো দিয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা করি। তারপরই পুলিশ  গ্রেপ্তার করে।’

গোপাগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার পর ওই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সমস্ত আলামত জব্দ করেছি। আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

ওই শিক্ষার্থীর বাবা পল্লি চিকিৎসক আলমগীর মীনা বলেন, ‘আমার ছেলে গত ২০১৪ সাল থেকে মানসিক রোগে ভুগছে। তাকে আমি ঢাকার মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মহিত কামাল, জিল্লুল কামাল, খুলনার ফরিদুজ্জামান ও গোপালগঞ্জের মাহাবুর রহমানকে দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি। ওষুধ খেলে সে ভালো থাকে। না খেলে উল্টো-পাল্টা করে। গত এক মাস ধরে সে ওষুধ খাচ্ছে না। তাই ফেসবুকে এ ধরনের স্ট্যাটাস দিয়ে আমাদের বিপদে ফেলেছে। এখন ছেলেকে নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়েছি। অজানা আশঙ্কায় আমাদের দিন কাটছে।’