প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা বেশি আক্রান্ত, লকডাউনের বিকল্প নেই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশের যেসব এলাকার মানুষ বিদেশে বেশি থাকেন এবং সেখান থেকে সম্প্রতি দেশে বেড়াতে এসেছেন সেসব এলাকায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের প্রবণতা বেশি বলে প্রাথমিকভাবে পাওয়া পরিসংখ্যানের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মাদারীপুর, শরীয়তপুর, শিবচর এমন কয়েকটি জায়গার নাম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এসব এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় অন্যান্য জেলার তুলনায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। যে ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে এসব এলাকার লোক বেশি। মাদারীপুরকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে দেখছি। কারণ, এই এলাকার অনেক মানুষ বিদেশে থাকেন।’
করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীন লকডাউনের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে উল্লেখ করে আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতির অবনতি হলে এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা হবে। আক্রান্ত এলাকাগুলো লকডাউন করার বিকল্প দেখছি না।’
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তি কিংবা সাধারণ মানুষ সবাইকে কোনো বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি না করার অনুরোধ করেন। তিনি সবাইকে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আহ্বান জানান। বিদেশে যারা প্রবাস জীবনে আছেন, তাদের এই মুহূর্তে দেশে না ফেরারও অনুরোধ করেন।
এ সময় মন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘মেয়ে ইতালি থেকে দেশে বেড়াতে এসে বাবাকে আক্রান্ত করে আবার ইতালি চলে গেছেন। কাজেই কেউ যাতে এখন বিদেশ থেকে না আসেন সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ ছাড়া জ্বর বা সর্দি-কাশি নিয়ে কেউ যাতে যানবাহনে চলাচল না করেন সেই আহ্বানও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, ‘যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে। ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করার অনুরোধ করছি।’
জাহিদ মালেক আজকের একনেক সভার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সেখানেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশ এখনো অনেক নিরাপদ রয়েছে। গত দুই মাস ধরে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেই কারণেই আমরা ভাল আছি। বিশ্বের অনেক বড় বড় দেশ পড়ে গেছে। ইতালিতে ৩০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, তিন হাজার মানুষ মারা গেছেন। এখন স্পেনে হচ্ছে।’
ইজতেমা ময়দান প্রস্তুত হচ্ছে
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টঙ্গীর তুরাগ নদীর পাড়ে বিশ্ব ইজতেমার জায়গায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টিন ও চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর কাছে জায়গাটি এরইমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন তারা এ জায়গাটি পরিষ্কার করবে এবং সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে।’
করোনাভাইরাসের কিটের জন্য কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘করোনার টেস্টের জন্য এক লাখ কিট অর্ডার দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম রয়েছে। উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।’
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী আরো জানান, ‘সারাদেশে বিদেশ ফেরত পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ কোয়ারেন্টিনে আছেন। আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ১৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন।’