ফেলে যাওয়া নবজাতকটি ইউএনওর ‘মাতৃস্নেহে’

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফেলে যাওয়া নবজাতক মেয়েটি ইউএনও লুবনা ফারজানার কোলে। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফেলে যাওয়া নবজাতক মেয়েটি এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানার ‘মাতৃস্নেহে’ আছে। তিনি শিশুটির মায়ের কোলের অভাব পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে তাঁর বাসায় নিয়ে এসেছেন। গতকাল সোমবার রাতে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে উপজেলা কমপ্লেক্সে তাঁর নিজ বাসভবনে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও লুবনা ফারজানা বলেন, ‘ওকে (শিশুটিকে) হাসপাতালের বেডে ফেলে রাখতে আমার মন চাইছিল না। এটুকু বাচ্চা মায়ের কোল ছাড়া থাকবে, তা কি ভাবা যায়? আমার বাসায় আমার কাছে হয়তো সেই অভাব কিছুটা হলেও পূরণ হবে ওর। এছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন নানান মানুষ যায়, দেখে। এতে করে ওর মধ্যে কোনো সংক্রমণও হয়ে যেতে পারে। তাই জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারের অনুমতিক্রমে নিয়ে আসলাম। আগামী বৃহস্পতিবার নাগাদ হয়তো আদালতের একটা আদেশ আমরা পাব। তখন সেই নির্দেশনায় ওর ঠাঁই হবে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘গত ২৪ জানুয়ারি রাতে ঘটনার পর থেকেই ইউএনও সার্বক্ষণিক শিশুটির খোঁজ রাখছিলেন। সোমবার রাত ৯টার দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে তাঁর জিম্মায় নিজ বাসভবনে নিয়ে গেছেন। এতে এই নবজাতকটি মায়ের স্নেহসহ পারিবারিক একটা আবেশে থাকবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রিফফাত জাহান ত্রপা বলেন, ‘শিশুটিকে দত্তক নিতে স্থানীয় এবং ঢাকা থেকে বেশ কয়েকজন ইউএনও স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ওকে কি করা হবে, কোথায় রাখা হবে-এইসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানার জন্য রোববার জেলা প্রবেশন কর্মকর্তা মো. মহসিন আদালতের নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। কিন্তু সেটির আদেশ আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। পরে রাতে শিশুটি ইউএনও স্যার তাঁর বাসভবনে নেওয়ার আগেও আমি আমার উপপরিচালক কামরুজ্জামান স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন কোনো আদেশ কপি তিনিও পাননি।’

গত ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে ভৈরবে বাসস্ট্যান্ড দুর্জয়মোড়ের দক্ষিণপাশে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এলাকায় দুই থেকে তিন দিন বয়সী ওই কন্যা শিশুটিকে এক ভিক্ষুকের কোলে রেখে পালিয়ে যায় এক তরুণী। পরে স্থানীয় লোকজনের কাছে খবর পেয়ে ইউএনও লুবনা ফারজানা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদের মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সোমবার রাত পর্যন্ত শিশুটি সেখানেই ছিল।