বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে ১০১০ কিলোমিটার পাড়ি দিল সেনাবাহিনীর সাইক্লিস্ট দল
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ‘মুজিব বর্ষ সাইক্লিং এক্সপেডিশন-২০২০’ এর ফ্ল্যাগ ইন কক্সবাজারের টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুজিব বর্ষকে ইতিহাসের পাতায় অমলীন করে রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০০ জন সেনাসদস্য অদম্য শক্তি ও সাহসিকতার সঙ্গে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা থেকে টেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত মোট এক হাজার ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। এই পথ পাড়ি দিতে তারা সময় নিয়েছে ২৩ দিন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের জিরো পয়েন্টে এসে পৌঁছায় সাইক্লিস্ট দলটি।
এ সময় সেখানে উপস্থিত সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরা তাদের অভিনন্দন জানায়। সাইক্লিং এক্সপেডিশনে অংশগ্রহণকারীরাও কর্মসূচিটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।
পরে সাবরাং জিরো পয়েন্টে আয়োজিত মুজিব জন্মশতবর্ষের সাইক্লিং এক্সপেডিশনের ফ্ল্যাগ-ইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের ১০ আর্টিলারি বিগ্রেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ওমর সাদিক।
এ সময় সাইক্লিং এক্সপেডিশনে অংশগ্রহণকারী সৈনিক রিনা এবং নেতৃত্বদানকারী মেজর আব্দুল্লাহ আবু আসিফ অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ওমর সাদিক বলেন, ‘বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং স্মরণীয় করে রাখতে সেনাবাহিনীর বছরব্যাপী নানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সাইক্লিং এক্সপেডিশনটির আয়োজন করা হয়েছে। দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার সময় এতে অংশগ্রহণকারীরা সাধারণ মানুষের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। আগামীতেও এ চেতনাকে ধারণ করে দেশ গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
ফ্ল্যাগ-ইন অনুষ্ঠানে সাইক্লিং এক্সপেডিশনে নেতৃত্বদানকারী মেজর আব্দুল্লাহ আবু আসিফসহ তিন সেনাসদস্য প্রধান অতিথি বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ওমর সাদির হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন। এরপর কর্মসূচির সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষকে স্মরণ করে গত ৮ নভেম্বর দেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে সাইক্লিং এক্সিপেডিশনে যাত্রা করে সেনাবাহিনীর ১০০ সদস্যের এই সাইক্লিস্ট দল।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ-৭১ স্মরণে এতে প্রতিদিনই ৭১ সেনা সদস্য সাইক্লিং করেছেন।
১০০ জনের দলে ছিলেন বিভিন্ন পদবির ১৬ জন অফিসার ও ৮৪ জন সৈনিক। এদের মধ্যে ১১ জন নারী সেনাসদস্য ছিলেন। তবে তার মধ্যে তিনজন যাত্রার দিন থেকে শেষদিন পর্যন্ত সাইক্লিংয়ে অংশ নিয়েছেন।
আয়োজকরা আরো জানায়, তেঁতুলিয়া থেকে দীর্ঘ এক হাজার ১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সাইক্লিস্ট দলটি যাত্রাপথে প্রধান সড়ক ও মহাসড়কগুলো ব্যবহার করেছে। এতে দলটি সেনাবাহিনীর আটটি ডিভিশন এবং বেশ কয়েকটি বেসামরিক স্থানে যাত্রা বিরতি করে।
দলটির যাত্রাপথে বিরতি নেওয়া স্থানগুলোতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গুরুত্ব সম্পর্কে তুলে ধরে। এ ছাড়া যাত্রাপথে সেনানিবাসসহ যেসব স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ পেয়েছে সেখানেই ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
মুজিববর্ষ সাইক্লিং এক্সপেডিশনের সমাপনী অনুষ্ঠান ৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আয়োজকরা।