বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ নামে ম্যুরাল নির্মাণকাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলী ও হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ম্যুরাল নির্মাণকাজের ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন ও ইলিয়াস সরকার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব’ নামে ম্যুরাল নির্মাণকাজের টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে কাজটি পায় জেনিথ কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে তার আত্মীয় রাজশাহীর চারঘাটের ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন ও ইলিয়াস সরকার ম্যুরাল নির্মাণের কাজটি শুরু করেন। কাজ চলাকালে মোট পাঁচ দিন ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। প্রতিটি ঢালাই কাজের দিন উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী ওমর বক্স ঠিকাদারদের কাছ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা করে সাড়ে সাত হাজার টাকা, ম্যুরালের স্লাব করার সময় ১৫ হাজার টাকা, সর্বশেষ ঢালাইয়ের সময় এক হাজার টাকা এবং বিলে স্বাক্ষর করার সময় ১১ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করেন।
অপরদিকে এলজিইডির হিসাবরক্ষক সাখাওয়াত হোসেন চার হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর স্বাক্ষর নেওয়ার ব্যবস্থা করেন বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদাররা।
উল্লেখ্য, উপজেলা পরিষদ চত্বরে ‘বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিব’ নামে ম্যুরাল নির্মাণের জন্য গত বছর টেন্ডার আহ্বান করা হয়। পরে ম্যুরাল নির্মাণের কাজ পায় জেনিথ কন্ট্রাকশন। এর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ছয় লাখ ৫০ হাজার টাকা।
অভিযোগকারী ঠিকাদার দেলোয়ার হোসেন জানান, নির্দিষ্ট সময়ে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকাজ করা হয়। এরপরও উপসহকারী প্রকৌশলী ওমর বক্স দফায় দফায় আমাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করেছেন। এ ছাড়া হিসাবরক্ষক সাখাওয়াত উপজেলা প্রকৌশলীর নামে চার হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বিলে স্বাক্ষর করার ব্যবস্থা করান। একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমাদের কাছে থেকে এভাবে দফায় দফায় ঘুষ নেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে রাণীনগর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী ওমর বক্স সরদার বলেন, ‘ঠিকাদাররা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকাজে অনিয়ম করার চেষ্টা করেছিল। শতভাগ কাজ আদায় করে নেওয়ায় তারা এমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।’
উপজেলা প্রকৌশলীর নামে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির হিসাবরক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি এমন লোক না। তাদের কাছ থেকে কোনো ঘুষ নেইনি। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাণীনগর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী শাহ মো. শহীদুল হক কোনো মন্তব্য না করে এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ দুলু।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ‘অভিযোগটি পাওয়ার পর উভয়পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে তদন্তের জন্য আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অফিসে আসতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’