বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে ৭ থেকে ১০ দিন পর
দেশের তিন অঞ্চলে বন্যা আরও সাত থেকে ১০ দিন থাকতে পারে। এরপর চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে এসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দীর্ঘমেয়াদি বন্যার পূর্বাভাস সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—জুনের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকাগর স্থানগুলোতে সামগ্রিকভাবে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে দেশের প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য প্রবণতা দেখা যেতে পারে। এবং ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকার কয়েকটি জেলায় স্বল্পমেয়াদী থেকে মধ্যমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং উজানের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় অবস্থিত ভারতের অরুণাচল ও আসাম রাজ্যে চলতি মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর প্রভাবে এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ ও পাবনা জেলায় সাত থেকে ১০ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। জুনের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিকে এসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
এ ছাড়া চলতি মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে হিমালয় পাদদেশীয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। যার ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় পাঁচ থেকে সাত দিনেরর বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। জুন মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথমদিকে এসব অঞ্চলে বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
গঙ্গা অববাহিকা
জুনে তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে গঙ্গা নদীর পানি-সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। অপরদিকে, পদ্মা নদীর পানি-সমতল বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। যার ফলে চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মেঘনা অববাহিকা
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মেঘনা অববাহিকা এবং এর কাছাকাছি ভারতের মেঘালয় ও বরাক অববাহিকায় জুনের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত এবং সময় বিশেষে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর ফলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি-সমতল দ্রুত বাড়তে পারে। যার ফলে, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় সাত থেকে ১০ দিন মেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। পরে এ মাসের চতুর্থ সপ্তাহের প্রথম ভাগে বৃষ্টিপাত কমে এসব অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
এ ছাড়া জুনের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি-সমতল বাড়লেও বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা কম বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে—চলতি মাসের তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কোনো ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই।