বরিশালে হোস্টেলে ‘ভূতের’ ভয়, অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চার ছাত্রী
বরিশালে একটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের হোস্টেলে ‘ভূত আতঙ্কে’ জ্ঞান হারানো ও অসুস্থ চার ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁদের ভর্তি করা হয়।
ওই শিক্ষার্থীরা বরিশাল নগরীর রুপাতলীর জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেহেদি হাসান বলেন, জমজম ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে নার্সিং ও ম্যাটস অনুষদের ছাত্রীদের হোস্টেলে থাকার বিধান রয়েছে। ইনস্টিটিউটের পাঁচতলায় ম্যাটস ও ছয়তলায় নার্সিং অনুষদের ছাত্রীরা থাকেন। সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ জন ছাত্রী থাকেন। অনেকদিন ধরেই বেশ কয়েকজন ছাত্রী দাবি করছিলেন হোস্টেলের ছাদে তাঁরা হাঁটাহাঁটির শব্দ পান। জিন-ভূত আতঙ্কের কথা জানিয়েছিলেন তাঁরা। এর মধ্যেই গতকাল শুক্রবার কোনো একটি অবয়ব দেখে ভয় পেয়ে অসুস্থ এবং অজ্ঞান হয়ে পড়েন চার ছাত্রী। পরে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ মেহেদী বলেন, ‘এ ঘটনা গোপন রাখতে বলেছিলেন স্যারেরা। এখন আমরা টিসি আতঙ্কে আছি। তাঁরা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের হাসপাতালেও আনেননি। আমরা বয়েজ হোস্টেল থেকে গিয়ে ওদের উদ্ধার করে হাসপাতালে এনেছি। ভূত তাড়াতে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ মিলাদও দিয়েছিল। তবে কোনো কাজ হয়নি। এরপর হুজুর আনা হয়েছিল। তিনি নিজের জীবন সংকটাপন্ন হওয়ার কথা বলে অন্য হুজুর আনার পরামর্শ দেন হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে। এরপরই ভয়াবহ এই ঘটনা ঘটে।’
জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের বাবুর্চি খালেদা দাবি করেন, প্রথমে ভূত এক ছাত্রীকে খামচি দেয়। এরপর মেয়েটি ভয় পেলে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ হুজুর এনে তেল ও পানি পড়া দেন। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যার পর আরেক ছাত্রীর বাঁহাতে ভূত খামচি দেয়। এরপর আতঙ্ক শুরু হলে আরো তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হন।
জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইন্সট্রাকটর জালিস মাহামুদ বলেন, ‘কোনো কারণে তাঁরা ভয় পেয়েছেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থরা বলছেন, তাঁরা ভূত দেখেছেন। আসলে তেমন কিছু নয়। জোরে বাতাসের শব্দে হয়তো তাঁরা ভয় পেয়েছেন। তাঁদের সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এই বিষয়ে চিকিৎসকেরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।